সবুজ-মেরুনে ‘বসু পরিবার’!
মোহনবাগান যেন শুধু একটি ক্লাব নয়, এক রাজনৈতিক মহাযুদ্ধের রঙ্গমঞ্চ। আর সেই রঙ্গমঞ্চে আবারও দেখা যেতে পারে ‘বসু পরিবার‘-এর এক পরিচিত মুখ—সৃঞ্জয় বসু। রাজনৈতিক শীর্ষ মহল থেকে ক্লাবের অন্দরমহল, সব জায়গাতেই এখন জোর আলোচনা—সচিবের পদে সৃঞ্জয়ের প্রত্যাবর্তন কি কেবল সময়ের অপেক্ষা?
সৃঞ্জয় নিজেও বিষয়টিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। বলেন, “আমি সারা বছর ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে থাকি, গ্যালারিতে বসে খেলা দেখি। নির্বাচন এলেই মাঠে নামছি এমন নয়।” সুপার জায়ান্টের ফুটবল শাখা যখন আলাদা ভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তখন ক্লাবের ক্রিকেট, হকি, টেনিস—এই খেলাগুলিকে নতুন করে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও তৈরি তাঁর।
মোহনবাগান মানেই রাজনীতির সরগরম ময়দান। এক ক্লাব কর্তার কথায়, “সিএবি-তে যত না রাজনীতি, মোহনবাগানের নির্বাচনে তার চেয়ে ঢের বেশি।” অরূপ বিশ্বাস, কুণাল ঘোষ, অতীন ঘোষ, অরূপ রায়—শাসকদলের বহু গুরুত্বপূর্ণ নেতা ক্লাবের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই প্রেক্ষাপটে, মুখ্যমন্ত্রীর এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে সৃঞ্জয়ের তাঁর ঠিক পেছনে বসে থাকা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও একটি ইঙ্গিত উঠে এসেছে—সৃঞ্জয়ের সম্পাদিত দৈনিকে আবারও তৃণমূলের মুখপত্র প্রকাশ শুরু হয়েছে। যা বর্তমান সচিব দেবাশিস দত্তের জন্য সুখকর ইঙ্গিত নয়। এর মাঝেই, সৃঞ্জয়ের বাবা, প্রাক্তন সচিব টুটু বসু, আইএসএল জয়ের পর ক্লাব কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে অভিনন্দন পাঠালেও, দেবাশিসকে একটিও শব্দ জানাননি। সেটাও কি নিছক উপেক্ষা?
এবারের আইএসএল কাপ জয়ের দিনে আরও একটি চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আমন্ত্রিত হননি ফাইনালে! বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মোহনবাগানের সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষও। সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “আক্ষেপ হয়, ভারতসেরা মোহনবাগানের তরফেও মন্ত্রীর প্রতি সম্মান জানানো হয়নি।” পরে জানানো হয়, বিলম্বিত আমন্ত্রণ গিয়েছে, কিন্তু এত দেরিতে যে তা গ্রহণযোগ্য নয়।
এই ঘটনাগুলির পরেই প্রশ্ন উঠছে—এটা কি কেবল ‘ভুল বোঝাবুঝি’, না কি সচেতন এক ‘রাজনৈতিক বার্তা’? মোহনবাগানের অন্দরমহলে এখন কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, এই ‘ভুল ধারণা’ বা ‘সৌজন্যের ঘাটতি’ যথেষ্ট হতাশ করেছে শীর্ষ মহলকে। এক কর্তার কথায়, “এত বড় ম্যাচের দিন সচিব নিজে ক্রীড়ামন্ত্রীকে ফোন করে আমন্ত্রণ জানাবেন না? এটা কি দায়িত্বশীলতা?”
সব মিলিয়ে, সবুজ-মেরুনে বাতাসে যেন পরিবর্তনের গন্ধ। নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি, কিন্তু অভিজ্ঞরা বলছেন, খেলা প্রায় শেষ—শুধু ফলাফল লেখা বাকি স্কোর বোর্ডে। সৃঞ্জয় বসুর নাম ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার হয়তো ‘বসু পরিবার’ আবার দখল নিতে চলেছে মোহনবাগানের নেতৃত্বের আসন।
মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ