তার আগে নতুন সঙ্গীকে মা বা বাবা বলে ডাকানো যাবে না: কলকাতা হাই কোর্ট!
কলকাতা হাই কোর্ট সম্প্রতি বিচ্ছেদ ও শিশুর হেফাজত সংক্রান্ত মামলার জন্য নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। আদালতের এই পদক্ষেপ শুধু কোনও নির্দিষ্ট মামলার জন্য নয়—দেশজুড়ে সব অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
🧒 শিশুর মানসিক সুরক্ষায় নতুন নিয়ম
আদালতের মতে, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের সময় শিশু মানসিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল অবস্থায় থাকে। তাই মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত, কোনও শিশুকে বাবা বা মায়ের নতুন সঙ্গীকে ‘বাবা’ বা ‘মা’ বলে ডাকতে বাধ্য করা যাবে না।
| বিষয় | আদালতের নির্দেশ |
|---|---|
| নতুন সঙ্গীকে ‘মা’ বা ‘বাবা’ বলা | নিষিদ্ধ, যতক্ষণ না হেফাজতের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় |
| জন্মদাতা অভিভাবকের সঙ্গে ফোনে কথা | দিনে অন্তত একবার বাধাহীনভাবে কথা বলার অনুমতি |
| নতুন সঙ্গীর ভূমিকা | শিশুর সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করা যাবে না |
| হেফাজতের আগে বিচ্ছেদ | শিশুর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা না দিলে অনুমোদিত নয় |
হাই কোর্ট আরও জানিয়েছে, যদি কোনও শিশু নিজের ইচ্ছেতেই নতুন সঙ্গীকে মা বা বাবা বলে ডাকে, তাহলে আদালত বা পরিবারের উচিত হবে বিষয়টি সংবেদনশীলভাবে সামলানো—কারণ এই সময় শিশুর মানসিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
⚖️ হেফাজত সংক্রান্ত নির্দেশিকা
এই নির্দেশিকায় আদালত আরও জানিয়েছে—
- শিশুর সঙ্গে যোগাযোগের অধিকার কোনোভাবেই খর্ব করা যাবে না।
- পারিবারিক আদালতকে মনোবিদদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে শিশুর মানসিক বিকাশ ব্যাহত না হয়।
- ভরণপোষণ ও পড়াশোনার ব্যবস্থা নিশ্চিত না করলে বিচ্ছেদ অনুমোদন করা যাবে না।
🧩 সামাজিক গুরুত্ব
এই পদক্ষেপ দেশের পারিবারিক আইন ব্যবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এর মাধ্যমে আদালত স্পষ্ট করেছে যে, শিশুকে কোনোভাবেই প্রতিশোধমূলক কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
বিচ্ছেদের সময় নতুন সম্পর্কে জড়ানো বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেও আদালত বলেছে, “শিশুর নতুন পরিবারে মানিয়ে নিতে সময় দিন, এবং পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখুন।”
🔗 আরও পড়ুন (Internal Links)
- ভারতের সর্বশেষ প্রযুক্তি ও সংবাদ আপডেট | TechnoSports Bangla
- কলকাতা হাই কোর্টের সাম্প্রতিক রায় ও সামাজিক প্রভাব
উপসংহার:
কলকাতা হাই কোর্টের এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে, আইনের চোখে শিশুর স্বার্থই সবার আগে। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ যতই ব্যক্তিগত হোক না কেন, তাতে যেন নিষ্পাপ শিশুদের জীবনে অন্ধকার নেমে না আসে—সেই বার্তাই দিল আদালত।

