সইফ-কাণ্ড
খ্যাতনামীরা কি সব সময় বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকেন? সইফ আলি খানের সাম্প্রতিক ঘটনার পর এমন প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে। মুম্বইয়ের অ্যাসোসিয়েশন অফ মেডিকেল কনসালট্যান্টস (এএমসি) অভিযোগ তুলেছে, সাধারণ মানুষ যেখানে স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পেতে দীর্ঘ অপেক্ষার শিকার হন, সেখানে সইফ আলি খানের মতো তারকাদের ক্ষেত্রে একই প্রক্রিয়া যেন রাতারাতি সম্পন্ন হয়।
তারকাকে অগ্রাধিকার?
সম্প্রতি সইফ আলি খান ছুরিকাহত হয়ে মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর সুচিকিৎসার জন্য মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁর স্বাস্থ্যবিমা সংস্থা ২৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করে। একই ভাবে চার দিনের চিকিৎসার জন্য মোট ৩৬ লক্ষ টাকার বিল দ্রুত মিটে যায়। অথচ, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে অনেক সময় এই ধরনের পরিষেবা পেতে সপ্তাহ থেকে মাস লেগে যায়।
এএমসি-র এক সদস্য বলেন, “সাধারণ মানুষের তুলনায় খ্যাতনামী বা প্রভাবশালীদের প্রতি বিমা সংস্থাগুলোর এই অগ্রাধিকারমূলক আচরণ খুবই দুঃখজনক।”
সাধারণ গ্রাহকদের অসুবিধা
একজন সাধারণ গ্রাহক, যিনি তুলনামূলকভাবে কম চিকিৎসা ব্যয় করেন, তাঁর ক্ষেত্রে এই পরিষেবা পেতে অনেক ধরণের প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়। অভিযোগকারীদের মতে, সইফ আলি খানের ক্ষেত্রে এমন কোনো বাড়তি নথিপত্র বা এফআইআর জমা দিতে হয়নি, যা সাধারণ গ্রাহকদের ক্ষেত্রে প্রায় বাধ্যতামূলক।
নাগরিকদের প্রতিবাদ
এক ব্যক্তি এই ঘটনার বিরুদ্ধে এএমসি-কে চিঠি লিখে অভিযোগ জানান। তাঁর চিঠির মাধ্যমে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কেন সাধারণ গ্রাহক একই ধরনের পরিষেবা পেতে এত ভোগান্তির শিকার হন?” চিঠিতে আরও বলা হয়, “বিমা সংস্থাগুলোর উচিত সমস্ত গ্রাহকের প্রতি সমান আচরণ করা। তারকাদের ক্ষেত্রে দ্রুত পরিষেবা দেওয়া হলে, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও তা নিশ্চিত করতে হবে।”
বৈষম্যের প্রতিকার চায় এএমসি
এএমসি-র তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ জনসাধারণের মধ্যে বিমা সংস্থার উপর আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে। সংগঠনের মতে, “সমস্ত গ্রাহকের প্রতি সমান নীতি প্রয়োগ করা উচিত। বিমা পরিষেবায় স্বচ্ছতা এবং দ্রুততার জন্য কড়া নিয়ম চালু করা প্রয়োজন।”
জনমনে প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর সমাজমাধ্যমে সাধারণ মানুষ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, তারকা বা প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়া মানেই সাধারণ মানুষের প্রতি বিমা সংস্থাগুলোর অবহেলা। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, “স্বাস্থ্যবিমা এমন একটি পরিষেবা, যা সবাই সমানভাবে পাওয়ার অধিকার রাখে।”
শেষ কথা
সইফ আলি খানের ঘটনা বিমা পরিষেবার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্যকে সামনে এনে দিয়েছে। এএমসি এবং অন্যান্য সংগঠন এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেছে। যদি এই বৈষম্য অব্যাহত থাকে, তবে সাধারণ মানুষ বিমা পরিষেবার প্রতি আস্থা হারাবে। দীর্ঘমেয়াদে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পুরো স্বাস্থ্যবিমা শিল্পের উপর।
বেআইনি ও হেলে পড়া বাড়ির সঙ্কটে বোরোভিত্তিক নজরদারি বাড়াচ্ছে কলকাতা পুরসভা