সইফকে পর পর ছুরির কোপ, এক দিন পরও অধরা দুষ্কৃতী
মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় সইফ আলি খান এবং তার পরিবারকে নিয়ে নিরাপত্তার প্রশ্ন আবারও সামনে এসেছে। গত বুধবার রাতে, সইফের বিলাসবহুল আবাসনে ঘটে একটি ভয়াবহ ঘটনা, যখন এক দুষ্কৃতী সইফের শোওয়ার ঘরে ঢুকে তাকে আক্রমণ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে। এরপর থেকেই পুলিশ তদন্তে নেমেছে, তবে ঘটনার পর এক দিন পেরিয়ে গেলেও, সেই দুষ্কৃতী এখনো অধরা। এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে আবাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।
ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ল দুষ্কৃতী, কেন বাধা পেল না?
ঘটনার দিন, সইফ আলি খান তার ছোট ছেলে জেহর ঘরের সামনে ওই ব্যক্তিকে দেখে দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু দুষ্কৃতী সইফের ওপর ছুরির কোপ চালায়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতী বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়েছিল এবং প্রায় এক ঘণ্টা পরে তাকে পালিয়ে যেতে দেখা যায় সিসিটিভি ফুটেজে। কিন্তু এই ঘটনার পরে প্রথম প্রশ্ন উঠে আসে, কীভাবে একজন অপরিচিত ব্যক্তি এমন সুরক্ষিত জায়গায় প্রবেশ করল? নিরাপত্তা কর্মীরা কোথায় ছিলেন? তাঁরা কি কিছুই লক্ষ্য করেননি?
অথচ, সইফের বিলাসবহুল আবাসনে বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, কীভাবে এই ঘটনা ঘটে গেল, তা নিয়ে তীব্র অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে ওই দুষ্কৃতী বাড়ির ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল এবং কোন বাধা ছাড়াই সে সইফের ঘর অবধি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল?
কীভাবে জানত দুষ্কৃতী, কোথায় রয়েছে সইফের ঘর?
এমনকি এক অবাক ঘটনা উঠে এসেছে, যা আরও বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। একাধিক সূত্রের দাবি, দুষ্কৃতী সইফের ছোট ছেলে জেহর ঘরের সামনে গিয়ে দাবি করে, ১ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে। এটি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, দুষ্কৃতী হয়তো আগেই জানত, কোথায় সইফের ছেলে ঘুমাচ্ছে। এতে মনে হচ্ছে, হয় সে খুব ভালোভাবে সেই আবাসনের পরিচিত ছিল, অথবা এর পেছনে কোনো অভ্যন্তরীণ সাহায্য ছিল। আবাসনের ভিতরে ঢোকার পর সে কীভাবে এই সঠিক ঘরটি চিহ্নিত করল, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার গলদ: কিভাবে ছুটে গেলো দুষ্কৃতী?
ঘটনার পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, দুষ্কৃতী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কিভাবে সে নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করল এবং পালিয়ে গেল? বাড়ির নিচে থাকা প্রহরীরা কি কিছু লক্ষ্য করেছিলেন? তারা কেন তাকে থামানোর চেষ্টা করেননি? বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা এত দুর্বল কেন? এটা এমন একটি প্রশ্ন, যা তদন্তকারীদের কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন সন্দেহ: সইফের ফ্ল্যাটের পরিচারকরা?
বাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে, সইফের ফ্ল্যাটের মেঝে রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্মীদের নামও উঠে এসেছে। তারাও তো জানতেন, কোন ঘর কোথায়। হয়তো তারা দুষ্কৃতীকে সাহায্য করতে পারে বা আগে থেকেই পরিচিত ছিল। পুলিশের দাবি, চুরির উদ্দেশ্যে ওই ব্যক্তি ওই বাড়িতে প্রবেশ করেছিল, তবে এটি একটি পরিকল্পিত আক্রমণও হতে পারে।
শাহরুখ, সালমান এবং করিনার উদ্বেগ
অপরাধের উদ্দেশ্য নিয়ে নানা জল্পনা উঠলেও, মুম্বই পুলিশ এবং সইফের পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিক বিভ্রান্তিকর খবর এড়িয়ে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে। এই ঘটনায় সইফের বন্ধু শাহরুখ খান এবং সালমান খান উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে, করিনা কপূর খান নিজেই আবেদন করেছেন, যেন অযথা এই বিষয়ে জল্পনা না বাড়ানো হয়।
এতদিন পরও দুষ্কৃতীকে ধরতে না পারার কারণে গোটা বি-টাউন এবং সইফের পরিবারে উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা বেড়ে চলেছে। অপরাধী কি সত্যিই বাড়ির সুরক্ষিত পরিবেশকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল, না কি এই ঘটনায় অন্য কোনো রহস্য লুকিয়ে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন মুম্বই পুলিশ।
সইফ আলি খান: ৬টা কোপ, শিরদাঁড়ার পাশেই গভীর ক্ষত সইফের, অবস্থা কি আশঙ্কাজনক?