Friday, March 21, 2025

সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানের উদ্বেগ, ইউনূস প্রশাসনের কড়া প্রতিক্রিয়া

Share

সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানের উদ্বেগ, ইউনূস প্রশাসনের কড়া প্রতিক্রিয়া!

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমেরিকার গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গাবার্ড। ভারত সফরে এসে এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তবে এই মন্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ ও ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর’ বলে দাবি করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।

মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানের মন্তব্যে অসন্তোষ

ভারত সফরকালে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গাবার্ড প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, হত্যা ও হেনস্থার ঘটনা নিয়ে আমেরিকা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন চিন্তিত।

গাবার্ড আরও দাবি করেন, বাংলাদেশে ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীদের’ প্রভাব রয়েছে এবং নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই উগ্রবাদী ভাবধারাকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। তাঁর মতে, ‘‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীরা বিশ্বজুড়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে, আর বাংলাদেশেও তারা সক্রিয়।’’

ঢাকার পাল্টা প্রতিক্রিয়া

গাবার্ডের এই মন্তব্যের পরই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার একটি কড়া বিবৃতি দেয়। সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘বাসস’-এর মাধ্যমে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইসলাম চর্চার জন্য পরিচিত। চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে।’’

ইউনূস প্রশাসনের মতে, মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং এটি ‘‘সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া অতিরঞ্জিত দাবি’’। তাদের বক্তব্য, বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশের মতোই বিভিন্ন সময় চরমপন্থার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, তবে তা দমনেও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে।

বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী অগ্রগতি

ইউনূস প্রশাসন দাবি করেছে, বাংলাদেশ সরকার আমেরিকা-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় সন্ত্রাস দমনে কাজ করে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতা এবং সামাজিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা হয়েছে।

ঢাকার মতে, ‘‘কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা পরিসংখ্যান না দেখিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার শামিল।’’ তারা মনে করে, এ ধরনের মন্তব্য আঞ্চলিক কূটনীতি ও দুই দেশের সম্পর্কে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপর প্রভাব

বাংলাদেশ ও আমেরিকার সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তবে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ওয়াশিংটনের মন্তব্য ঢাকার জন্য স্পর্শকাতর হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশ সরকার চায়, যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে আরও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নিক এবং বাস্তব ভিত্তির উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক। মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানের বক্তব্যের জেরে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-আমেরিকা সম্পর্ক কোন দিকে গড়াবে, তা এখন কূটনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

৭০০ কোটির প্রয়োজন হৃতিকের! কিন্তু কেন? পাশে নেই বাবা রাকেশও

Read more

Local News