শ্রেয়সের শূন্যে কেকেআরের দুঃস্বপ্ন!
পয়লা বৈশাখের দিনটা হতে পারত কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)-এর রঙিন জয়ের দিন। কিন্তু বাস্তবটা হল সম্পূর্ণ বিপরীত। পঞ্জাব কিংস যেন এক রুদ্র ‘কালবৈশাখী’ ঝড় হয়ে তছনছ করে দিল কেকেআর-এর স্বপ্ন। মুল্লানপুরে শ্রেয়স আইয়ারের ‘ঘরে’ ফিরে গিয়েও কেকেআর মর্যাদা রক্ষা করতে পারল না।
শ্রেয়স আয়ার—একসময় যিনি কেকেআরকে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন, এখন তিনি প্রতিপক্ষ। মাঠে নেমেই যেন প্রমাণ করতে চাইছিলেন, কে আসলে নেতা। অথচ ব্যাট হাতে নিজে রানই পেলেন না—শূন্য রানে ফিরলেন প্যাভিলিয়নে। কিন্তু অধিনায়কত্বে দিলেন চমক। তাঁর তীক্ষ্ণ ফিল্ড সেটিং, বোলিং পরিবর্তন আর নিখুঁত পরিকল্পনায় কেকেআরের ইনিংস একেবারে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল।
ছবিটা ছিল নাটকীয়। ৮ বলেই নারাইন ও ডি’ককের উইকেট হারিয়ে কাঁপতে শুরু করে কেকেআর। তখনই শ্রেয়সের চোখে ভাসল সম্ভাবনার আভা। তবে রাহানে-অঙ্গকৃশ জুটির রানে আবারও বদল ঘটল মেজাজে। কলকাতা যখন ফের লড়াইয়ে ফিরতে চাইছে, তখন একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তে নিজেদের শেষ করে ফেলে তারা।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত? রাহানেকে আউট দেওয়ার সময় রিভিউ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত। বল অফ স্টাম্পের বাইরে থাকলেও রাহানে রিভিউ না নিয়েই মাঠ ছাড়েন। সেই একটি ভুলেই বদলে যায় ম্যাচের গতি। ৭২ রানে ৩ উইকেট থেকে ৭৯ রানে ৮ উইকেট হারায় কেকেআর! মাত্র ৭ রানে ৫ উইকেট—এ যেন আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের পরিণতি।
যুজবেন্দ্র চহল বল হাতে ছিলেন বিধ্বংসী। ৪ উইকেট নিয়ে একাই দিশেহারা করে দিলেন কেকেআর-কে। শ্রেয়সের পরিকল্পনায় যেন যোগ হল তাঁর তীক্ষ্ণ স্পিন। পঞ্জাবের ফিল্ডিং ভুলত্রুটি সত্ত্বেও কেকেআর সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ। রাসেলের শেষ মুহূর্তের মরিয়া চেষ্টা অঙ্ক বদলাতে পারেনি।
এই ম্যাচের মূল কথা? ব্যাটিং নয়, রণনীতি। দুই মুম্বইকর—রাহানে বনাম শ্রেয়স—দু’জনেই একে অপরকে খুব ভালো করে চেনেন। রাহানে ফাঁদ পাতলেন, শ্রেয়স পাল্টা চাল খেলেন। কিন্তু শেষ হাসি হাসলেন সেই ‘বিতাড়িত’ শ্রেয়স।
কেকেআর-এর এই হার শুধুমাত্র পয়েন্ট টেবিলে দুই পয়েন্ট হারানো নয়, এটা মর্যাদার হারও। প্রাক্তন অধিনায়কের সামনে হার কেকেআরের দল পরিচালনার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও প্রশ্ন তোলে। যে শ্রেয়সকে তারা সরে যেতে বলেছিল, সেই শ্রেয়সই তাদের হারিয়ে দিল কৌশলে।
কেকেআর কি এবার বুঝবে, কাকে হারিয়ে তারা নিজেদেরই দুর্বল করে ফেলেছে?
মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ