শেষ হতে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ৩৮ মাস পেরিয়ে, অবশেষে দেখা মিলেছে আশার আলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই হতে পারে বহু প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি। যদি এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ট্রাম্পের নাম যে শান্তির ইতিহাসে লেখা থাকবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কূটনৈতিক মহল।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার সিদ্ধান্ত নেন। সেই থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কাঁপছে ইউরোপ। শহর ধ্বংস, হাজারো মানুষের মৃত্যু, লক্ষ লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তু— এসবের মাঝেই আন্তর্জাতিক মহল বারবার শান্তির আহ্বান জানিয়েছে। এবার, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আশার সুরে জানালেন— হয়তো সব শেষ হতে চলেছে।
যুদ্ধবিরতি মানলে উঠবে নিষেধাজ্ঞা
ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ লিখেছেন, “যদি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়, তাহলে দু’দেশই আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যে অংশ নেবে এবং নিজেদের ভাগ্য গড়ে তুলবে।” তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, মস্কো যদি যুদ্ধ থামায়, তাহলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে। এর ফলে রাশিয়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ফিরতে পারবে, যা তাদের অর্থনীতির জন্য নতুন সুযোগ এনে দেবে।
মার্কো রুবিয়োর বার্তা ও সতর্কতা
মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো সম্প্রতি ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, “এই যুদ্ধ আমাদের নয়। কিন্তু আমরা চাই, এটা শেষ হোক।” তিনি আরও বলেন, আলোচনা চলবে কয়েকদিন বা সপ্তাহখানেক। যদি ফল না মেলে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মনোযোগ অন্যত্র সরিয়ে নেবে।
এছাড়াও তিনি ক্রাইমিয়া প্রসঙ্গে জানান, আলোচনার মাধ্যমেই রাশিয়ার দাবি মেনে নেওয়ার একটি কূটনৈতিক পথ খোলা আছে। অর্থাৎ, ইউক্রেনের ‘আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ভূখণ্ড’ হলেও, রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রাইমিয়া নিয়ে কোনও চুক্তিতে পৌঁছনো যেতে পারে।
পুতিনের ইস্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা
গত শনিবার ইস্টার উপলক্ষে পুতিন ৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন। তবে ইউক্রেনের দাবি, সেই সময়েও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। ফলে বাস্তবে যুদ্ধ থেমে থাকেনি।
এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ‘চুক্তির সম্ভাবনা’ নিয়ে বক্তব্যকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন কূটনৈতিক মহল। কারণ, দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর এবার বাস্তব কোনও চুক্তির দিকেই এগোতে পারে দুই দেশ।
রিয়াধে তিন দফা আলোচনা
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনার জন্য গত ২৪ মার্চ থেকে সৌদি আরবের রিয়াধে ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের তত্ত্বাবধানে তিন দফা আলোচনা হয়েছে— পৃথকভাবে ও ত্রিপাক্ষিক ফর্ম্যাটে। যদিও এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবুও একে বড় অগ্রগতি বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
৩৮ মাসের দীর্ঘ যুদ্ধ যদি ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শেষ হয়, তবে নিঃসন্দেহে এটি হবে তার প্রেসিডেন্সির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সাফল্য। এখন নজর আগামী কয়েকদিনের দিকে— আদৌ কি থামবে যুদ্ধের আগুন, নাকি আবারও আশাভঙ্গ ঘটবে?
বাঙালির পাতে ভাত নয়, থাকবে ঘি-মাখন-প্রোটিন! ডায়াবেটিস আর মোটা হওয়া আটকাবে এই নতুন ডায়েটেই?