আন্দোলনে উত্তাল এসএসসি দফতর!
শিক্ষা নিয়ে রাজ্যে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। একের পর এক তালিকা, বাদপড়া, আন্দোলন—সব মিলিয়ে রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) দফতর যেন রণক্ষেত্র। সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া ১৭,২০৬ জন ‘অযোগ্য নন’ এমন শিক্ষকের তালিকা থেকে ফের বাদ পড়লেন আরও ১৮০৩ জন। ফলে নতুন করে তৈরি হল ১৫,৪০৩ জনের তালিকা। ইতিমধ্যেই সেই নামের তালিকা পৌঁছে গেছে জেলাগুলির ডিআই অফিসে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও তার পরবর্তী প্রভাব
২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্যানেলকে অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। এতে চাকরি হারান ২৫ হাজার ৭৩৫ জন প্রার্থী, যাঁদের মধ্যে প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন। পরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ১৭ হাজার ২০৬ জনকে ‘দাগি নন’ বলে চিহ্নিত করে এবং তাঁদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি চায় আদালতের কাছে। সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুরও করে।
কী কারণে বাদ পড়লেন ১৮০৩ জন?
নতুন এই বাদ পড়াদের বিষয়ে জানানো হয়েছে, তাঁদের ওএমআর শিট, উত্তরপত্র বা অন্যান্য নথিতে সমস্যা রয়েছে। সেই কারণেই ১৮০৩ জনকে বাদ দিয়ে বাছাই করা হয়েছে নতুন ১৫,৪০৩ জনের নাম। আইন অনুযায়ী এবং আদালতের নির্দেশ মেনে এখন এই তালিকা অনুযায়ী বেতন ও চাকরির অনুমতি মিলবে।
উত্তপ্ত আন্দোলন: দফতরে আটকে পড়া চেয়ারম্যান
যাঁরা আগেই চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই চাইছেন যোগ্য-অযোগ্যদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হোক। সেই দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে এসএসসি দফতরের সামনে বিক্ষোভ চলছে। চাকরিহারা প্রার্থীরা অবস্থান বিক্ষোভ থেকে শুরু করে ঘেরাও আন্দোলনও চালিয়েছেন। এই আন্দোলনের জেরে রাতভর দফতরের মধ্যে আটকে ছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে।
কলকাতা হাই কোর্টে মামলার জন্য তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হলে বুধবার দফতর থেকে বের হতে দেওয়া হয়। তবে আন্দোলন এখনো থামেনি।
সরকার ও কমিশনের অবস্থান
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আগেই জানিয়েছিলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে তালিকা প্রকাশ হবে। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় চাকরিহারাদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। এসএসসি জানিয়েছে, তারা আদালতের নির্দেশ মেনেই চলবে এবং কেবলমাত্র যাঁদের নাম তালিকায় আছে, তাঁরাই বেতন ও চাকরি পাবেন।
উপসংহার
একদিকে আদালতের নির্দেশ, অন্যদিকে চাকরি হারানো হাজার হাজার শিক্ষকের বিক্ষোভ—এই দ্বন্দ্বের মধ্যেই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে। প্রশ্ন উঠছে—তবে কি এবার সত্যিই ‘যোগ্য’ তালিকা চূড়ান্ত হল, না কি এই তালিকা নিয়েও আবার শুরু হবে নতুন বিতর্ক? উত্তরের অপেক্ষায় গোটা রাজ্য।
দেশ ছেড়ে কাতারে সংসার? সইফ-করিনার নতুন জীবন শুরু হতে চলেছে!