Friday, January 31, 2025

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস! উদ্যোগ নিচ্ছে ইউনূসের সরকার

Share

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এবার ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড কর্নার নোটিস জারির কথা ভাবছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। রবিবার এ বিষয়ে কথা বলেছেন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি সরাসরি শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ না করলেও, বাংলাদেশে গত জুলাই-অগস্ট মাসের ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আমরা যেখানেই থাকুক না কেন, ইন্টারপোলের সাহায্যে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”

গত বছরের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যেই শেখ হাসিনার সরকার পতন হয়। এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে ৫ অগস্ট ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন হাসিনা। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সেই সময় জানিয়েছিল, নিরাপত্তাজনিত কারণে হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এরপর থেকেই তিনি ভারতে রয়েছেন বলে জানা যায়। তবে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস জারি হলে হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস মূলত পলাতক অভিযুক্তদের খুঁজে বের করতে জারি করা হয়। ইন্টারপোলের বিভিন্ন ধরনের নোটিস রয়েছে, তবে রেড কর্নার নোটিস হলে তা সদস্য দেশগুলিকে সতর্ক করে অভিযুক্তকে ধরার নির্দেশ দেয়। এর ফলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর তদন্তকারী সংস্থাও হাসিনাকে খুঁজে বের করতে বাধ্য হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাইদুর রহমানের খুনের ঘটনায় হাসিনার নাম উল্লেখ করে প্রায় ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। শুধু তাই নয়, হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে অন্তত ২৩৩টি ফৌজদারি মামলা রুজু হয়েছে তার বিরুদ্ধে, যার মধ্যে ১৯৮টি ক্ষেত্রে খুনের অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গত ১৭ অক্টোবর এই মামলাগুলির প্রেক্ষিতে হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। কিন্তু এত দিন পর্যন্ত তাকে ফেরানোর ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ইউনূসের সরকার।

সম্প্রতি একটি আমেরিকান সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতা-বিরোধী অপরাধের অভিযোগ থাকায় এবং আদালতের রায় ঘোষণার অপেক্ষায় থাকায়, এখনই তাকে ফেরানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। তবে আদালতের রায় বের হওয়ার পর অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে আগামী ১৮ নভেম্বর হাসিনাসহ অন্যান্য অভিযুক্তদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্যই ইউনূসের সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Read more

Local News