Tuesday, May 13, 2025

শুল্কযুদ্ধে ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ! ৪৯ বছর পর ‘জীবন্ত’ মাওয়ের বার্তায় আগুন জ্বালাল বেজিং

Share

শুল্কযুদ্ধে ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ!

চিন-আমেরিকা শুল্কযুদ্ধ চরমে পৌঁছতেই আচমকা ইতিহাসকে সামনে এনে কৌশলী চাল দিল বেজিং। প্রায় ৪৯ বছর আগে প্রয়াত চেয়ারম্যান মাও সে তুঙের কোরীয় যুদ্ধকালীন একটি পুরনো ভিডিও সামনে এনেছে চিন সরকার। ভিডিওতে মাও বলছেন, “আমরা কখনও নতি স্বীকার করব না, সম্পূর্ণ জয় না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবেই।”

চিনের এই পদক্ষেপকে অনেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ বলেই দেখছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের আমদানিকৃত চিনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর পাল্টা জবাবে, চিনও আমেরিকান পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ কর বসিয়ে জবাব দিয়েছে। শুল্কের এই লড়াইয়ে কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে মাওয়ের যুদ্ধকালীন হুঁশিয়ারিকে সামনে এনেছে বেজিং।

১৯৫৩ সালের সেই ঐতিহাসিক ভিডিওতে মাও বলেন, “এই যুদ্ধ কত দিন চলবে তা আমরা ঠিক করতে পারি না। সেটা ট্রুম্যান কিংবা আইজ়েনহাওয়ার উপর নির্ভর করছে। তবে আমরা কখনও পিছু হটব না।” এই বক্তব্য ভাইরাল হতেই চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং ‘এক্স’-এ (পূর্বতন টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করে লেখেন, “উস্কানিতে ভয় পায় না চিন, আমরা কখনও পিছু হটব না।”

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি! কোরীয় যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরছে চিন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিভক্ত কোরীয় উপদ্বীপে উত্তরে ছিল রাশিয়ার মদতপুষ্ট কমিউনিস্ট সরকার আর দক্ষিণে মার্কিন ঘনিষ্ঠ উদারনৈতিক সরকার। ১৯৫০ সালে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণের রাজধানী সোল আক্রমণ করে। এর জবাবে রাষ্ট্রপুঞ্জের নেতৃত্বে আমেরিকা সহ ২১টি দেশ যুদ্ধ ঘোষণা করে। প্রথমে চিন সরাসরি অংশ নেয়নি। কিন্তু পিয়ংইয়ং যখন প্রায় পতনের মুখে, তখন চেয়ারম্যান মাও গঠন করেন ‘পিপল্‌স ভলেন্টিয়ার্স আর্মি’।

এই বাহিনী মার্কিন নেতৃত্বাধীন সেনাদের ওপর দুটি বড়সড় আক্রমণ চালায়। পাল্টা অভিযানে মার্কিন সেনাপতি ম্যাথিউ রিডগওয়ে, চিনা বাহিনীর রসদ ও অস্ত্র সরবরাহ লাইন গুঁড়িয়ে দেন। হোয়েংসং ও চিপিয়ংনি যুদ্ধে শুধু চিনা পক্ষেই নিহত হন প্রায় ৯০ হাজার সৈনিক।

পরবর্তী সময়ে দুই কোরিয়ার সীমান্ত রেখা ধরে এক প্রকার স্থবির যুদ্ধ চলতে থাকে, যার পরিণতিতে ১৯৫৩ সালের ২৭ জুলাই চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়।

শীতল যুদ্ধ থেকে শুল্কযুদ্ধ—একই ছকের পুনরাবৃত্তি?

কোরীয় যুদ্ধ ছিল শীতল যুদ্ধের প্রথম প্রকাশ। সেই সময় মাও মুখোমুখি হয়েছিলেন ট্রুম্যান ও আইজ়েনহাওয়ার মতো মার্কিন প্রেসিডেন্টদের। আর এখন তাঁর উত্তরসূরি শি জিনপিং-এর সামনে ট্রাম্প।

চিন স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছে, ইতিহাস ভুলে যায় না। আর সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই তাদের রক্তে। ৪৯ বছর পর মাওয়ের কণ্ঠে সেই চিরাচরিত দৃঢ়তা আবার যেন শুনতে পেল বিশ্ব।

এখন প্রশ্ন, নতুন শুল্কযুদ্ধে শেষ হাসি কে হাসবে—ট্রাম্প, না শি জিনপিং? উত্তর দেবে সময়।

মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ

Read more

Local News