শুল্কনীতি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ ট্রাম্পের!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের কড়া শুল্কনীতির পথে হাঁটলেন। পারস্পরিক বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে তিনি এবার ১২টি দেশকে চিঠি পাঠিয়েছেন, যেখানে শুল্ক আরোপের নতুন কাঠামো তুলে ধরা হয়েছে। এই ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অথচ ভারতের সঙ্গে বহু আলোচনার পরেও এখনও কোনও বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন হয়নি। চুক্তির ভবিষ্যৎ ঝুলে রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ভারতও কি সেই ১২ দেশের তালিকায় রয়েছে?
৯ জুলাই সোমবার শেষ হচ্ছে ৯০ দিনের সেই স্থগিতাদেশের সময়সীমা, যা আগে শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি ১২টি দেশের উদ্দেশ্যে শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত চিঠিতে সই করে ফেলেছেন এবং আগামী সোমবার তা প্রকাশ্যে আসবে। তবে এখনও পর্যন্ত এই তালিকায় কোন কোন দেশ রয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো ট্রাম্প দেশের ভিত্তিতে পৃথক শুল্ক হার ঘোষণা করেন। সেই তালিকায় ছিল চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, ইজ়রায়েল, জাপান, কোরিয়া, যুক্তরাজ্য সহ একাধিক দেশ। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের উপর চাপানো হয়েছিল ২৬% শুল্ক, ভিয়েতনামের উপর ৪৬%, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর ২০%, দক্ষিণ কোরিয়া ২৫% এবং সুইৎজ়ারল্যান্ডের উপর ৩১% পর্যন্ত শুল্ক। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে তিন মাসের জন্য তা স্থগিত রাখা হয়েছিল।
গত তিন মাসে মার্কিন প্রশাসন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বাণিজ্যচুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে। যদিও কয়েকটি দেশের সঙ্গে আংশিক চুক্তি সম্পন্ন হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আলোচনা থমকে রয়েছে। বিশেষ করে ভারতের ক্ষেত্রে। দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বহু উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে, কিন্তু কোনও চূড়ান্ত রফাসূত্র এখনও স্থির হয়নি। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের এক প্রতিনিধি দল, রাজীব আগরওয়ালের নেতৃত্বে, সম্প্রতি আমেরিকা সফর করে ফিরেছেন। তবে সেই বৈঠকে উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি হয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস থেকে পাঠানো চিঠিতে ভারতের নাম আছে কি না, তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। ট্রাম্পের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ১ অগস্ট থেকে বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর নতুন আমদানি শুল্ক কার্যকর হবে। এমনকি কিছু দেশের উপর ৭০% পর্যন্ত শুল্ক চাপানো হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার এই শুল্কনীতি শুধুমাত্র আমদানির ব্যয় বাড়িয়ে দেবে না, বরং বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ভারত-মার্কিন সম্পর্ক, বিশেষ করে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং ফার্মা ক্ষেত্রে পারস্পরিক নির্ভরতা থাকলেও, এই চুক্তি না হলে ভারতের রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অবস্থানের ফলে যেমন গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে অস্থিরতা বাড়ছে, তেমনই ভারতের সামনে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে—বাণিজ্য চুক্তি ছাড়া এই কঠিন বাজারে আদৌ কতটা সুবিধা আদায় করা সম্ভব হবে।
গলওয়ান উপত্যকায় রক্তাক্ত সলমন খান! ভাইজানের নতুন ছবির পেছনে রয়েছে ভারতের সাহসী ইতিহাস

