শুভমনের ইনিংসে অনুপ্রাণিত বৈভব!
এজবাস্টনে যখন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে ব্যাট হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন ভারত অধিনায়ক শুভমন গিল, তখন গ্যালারিতে চোখ রেখেছিল আরও কিছু উজ্জ্বল চোখ। ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্যরা তখন উপস্থিত ছিলেন মাঠে। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন ১৪ বছরের প্রতিভাবান ক্রিকেটার বৈভব সূর্যবংশী, যিনি খোলাখুলিই জানালেন— দেশের হয়ে লাল বলের ক্রিকেট খেলাই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন।
ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দল এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডে সাদা বলের সিরিজ খেলতে গিয়েছে। সেই ব্যস্ত সূচির মধ্যেই এজবাস্টনের দ্বিতীয় টেস্ট দেখতে হাজির হন বৈভবরা। ম্যাচ দেখার সেই মুহূর্তের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। পরে ভারতীয় বোর্ডের তরফে একটি ভিডিও প্রকাশ করে যেখানে তরুণ ক্রিকেটাররা তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। বৈভব বলেন, “এই প্রথম টেস্ট ম্যাচ দেখছি ইংল্যান্ডে। এটা আমার কাছে একটা বিশেষ অভিজ্ঞতা। মাঠে বসে দেখে বুঝলাম টেস্ট ক্রিকেট কতটা ধৈর্যের খেলা।”
তবে শুধু খেলা দেখা নয়, তাঁদের শেখানোর উদ্দেশ্যও ছিল কোচ হৃষীকেশ কানিতকরের। তিনি বলেন, “(ভিভিএস) লক্ষ্মণ বলেছিল, ছেলেদের মাঠে নিয়ে যাওয়া উচিত। এখানে এসে ওরা শিখবে— প্রতিটি বল বাউন্ডারির জন্য নয়। কখন কীভাবে ব্যাট করতে হয়, সেটাই শেখা সবচেয়ে জরুরি।” শুভমনের ২৬৯ রানের ইনিংসকে উদাহরণ করে কানিতকর বলেন, “শুভমন দেখিয়েছে কীভাবে ধৈর্য, স্থিরতা আর সঠিক সময়ে শট নির্বাচন করে একজন টেস্ট ইনিংস গড়ে তোলে। ছোটখাটো জিনিসগুলো মঞ্চ যত বড়ই হোক না কেন, ঠিকঠাক করা গেলে সফলতা আসবেই।”
বৈভবও গিলের ইনিংসে মুগ্ধ। তাঁর মুখে স্পষ্ট প্রশংসা, “শুভমন আমাদের সবার কাছেই অনুপ্রেরণা। আমি এখন আরও বেশি করে লাল বলের ক্রিকেট খেলতে চাই। দেশের হয়ে এমন একটি ইনিংস খেলার স্বপ্ন এখন থেকে দেখতে শুরু করলাম।”
এদিকে দলের বোলার আমনজ্যোৎ সিংহ জানান, “বুধবার সন্ধ্যাতেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে বৃহস্পতিবার আমরা ম্যাচ দেখতে যাব। শুভমন তখন ১১৪ রানে ছিলেন। ওর ব্যাটিং দেখে শেখার মতো অনেক কিছু রয়েছে।”
এই সফর যে শুধু খেলা নয়, শিক্ষাও, সেটাই স্পষ্ট করে দিয়েছে কোচ এবং ক্রিকেটারদের প্রতিক্রিয়া। তরুণ খেলোয়াড়দের সামনে থেকে টেস্ট ম্যাচ দেখার সুযোগ তাঁদের ক্রিকেট ভাবনার পরিধি আরও বিস্তৃত করবে বলেই মত ভারতীয় দলের সাপোর্ট স্টাফদের। শুভমন গিলের মতো ধৈর্যশীল ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে শেখার এই মুহূর্ত হয়তো বৈভব সূর্যবংশীর মতো অনেকেই কোনও দিন ভুলবেন না।

