এশিয়া কাপ ফাইনালের পর তীব্র আক্রমণ পাক অধিনায়কের!
এশিয়া কাপের ফাইনাল জিতে ইতিহাস গড়লেও চ্যাম্পিয়নের ট্রফি তুলতে অস্বীকার করেছিল সূর্যকুমার যাদবের ভারতীয় দল। সেই সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক। এবার মুখ খুললেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সলমন আঘা। তাঁর দাবি, ভারতের এই আচরণ শুধু পাকিস্তানকেই নয়, গোটা ক্রিকেট বিশ্বকেই অসম্মান করেছে।
রবিবারের ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। কিন্তু ম্যাচ শেষ হওয়ার পরও সূর্যরা মাঠে দাঁড়িয়ে থাকেন, শুরু হয় না পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। কারণ, ভারতীয় দল ঘোষণা করে, তারা এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মহসিন নকভির হাত থেকে ট্রফি নেবে না।
এই সিদ্ধান্তেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। ম্যাচ-পরবর্তী সাংবাদিক বৈঠকে সলমন বলেন, “ভারত আমাদের সঙ্গে হাত মেলায়নি, নকভির কাছ থেকেও ট্রফি নেয়নি। ওরা শুধু পাকিস্তানকে অপমান করেনি, গোটা ক্রিকেটকেই অপমান করেছে। যদি আজকের এই আচরণ দেখে অন্য দলগুলোও এমনটা করতে শুরু করে, তাহলে খেলার ভবিষ্যৎ কোথায় যাবে? ক্রিকেটাররা রোল মডেল। মাঠে তাদের এই রকম আচরণ দেখে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কী শিখবে? এ বার যা হয়েছে, তা সত্যিই খুব খারাপ।”
ভারতের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলেও শুরু হয়েছে বিতর্ক। পাকিস্তানের তরফে শোনা যাচ্ছে, পুরস্কার বিতরণী বিলম্বিত হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল ভারতীয় বোর্ডের অবস্থান। খেলা শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘ সময় মাঠে দেখা যায়নি পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের। জানা গিয়েছে, ভারত জানিয়েছিল, তারা নকভির কাছ থেকে ট্রফি নিতে রাজি নয়। পরে প্রায় সওয়া ঘণ্টা বিলম্বে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
সূর্যকুমার অবশ্য নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। তিনি বলেন, “চ্যাম্পিয়ন দল ট্রফি পায়নি – ক্রিকেট খেলা শুরু করার পর থেকে এমন ঘটনা আমি জীবনে দেখিনি। কিন্তু আমার কাছে দলের ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফেরাই আসল ট্রফি। সবাই বলছে, ভারত এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন – সেটাই আসল কথা।”
ভারতীয় বোর্ডও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বোর্ডের সচিব দেবজিৎ শইকীয়া বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে। তাই আমরা এমন কারও কাছ থেকে পুরস্কার নেব না, যিনি পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী। এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত, আগেই আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম।”
এই ঘটনার জেরে শুধু ক্রিকেট নয়, দুই দেশের সম্পর্কও ফের নতুন বিতর্কে জড়িয়েছে। পাকিস্তানের তরফে দাবি, ভারত রাজনীতিকে ক্রিকেটে টেনে এনেছে। অন্যদিকে, ভারতীয় পক্ষ বলছে, দেশের সম্মানের প্রশ্নে কোনও আপস করা যায় না।
সব মিলিয়ে, এশিয়া কাপ ফাইনালের মাঠে যা ঘটল, তা শুধু ট্রফি না নেওয়ার ঘটনা নয় – এটি হয়ে উঠেছে ক্রিকেট ইতিহাসের এক নজিরবিহীন অধ্যায়। পাকিস্তানের মতো অনেকেই মনে করছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরিবেশেও প্রভাব ফেলতে পারে। আর সেই কারণেই সলমন আঘার সতর্কবাণী – “আজ যা ঘটল, সেটি ক্রিকেটের চেতনার পরিপন্থী। যদি এর নজির তৈরি হয়, খেলার আত্মাটাই হারিয়ে যাবে।”
এই বিতর্কের রেশ এখনো থামেনি। একদিকে ভারতীয় বোর্ডের নীতিগত সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে পাকিস্তানের ক্ষোভ – দুয়ের সংঘর্ষে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, মাঠের খেলায় রাজনীতি ঢুকে পড়লে ক্রিকেটের প্রকৃত সৌন্দর্য কি আর আগের মতো থাকবে?
‘সত্যমেব জয়তে’! দিল্লি হাই কোর্ট আবেদন খারিজ, সমীরের মন্তব্যে নতুন ইঙ্গিত?

