চাহিদার ঘাটতিতে ছ’মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ভারত!
দেশের শিল্প খাতের গতি আবারও মন্থর। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে সরকারের বার্তা থাকলেও বাস্তব ছবিতে সেই আভাস খুব একটা নেই। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতরের সদ্য প্রকাশিত তথ্যে দেখা গিয়েছে, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশের শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে মাত্র ২.৯ শতাংশে। যা গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। অথচ গত বছর একই সময়ে এই হার ছিল ৫.৬ শতাংশ এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতেও ছিল ৫.২ শতাংশ।
এই পতনের নেপথ্যে মূলত দায়ী করা হচ্ছে বাজারে চাহিদার ঘাটতিকে। অর্থনীতিবিদদের মতে, সাধারণ মানুষের হাতে খরচ করার মতো বাড়তি অর্থ নেই, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও পরিষেবার দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে, এবং সঙ্গে রয়েছে চিরাচরিত বেকারত্ব সমস্যা। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে উৎপাদনে।
📉 কোন খাতে কেমন অবস্থা?
- উৎপাদন শিল্প: ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে যেখানে বৃদ্ধির হার ছিল ৪.৯ শতাংশ, সেখানে ২০২৫-এর ফেব্রুয়ারিতে তা নেমেছে ২.৯ শতাংশে।
- খনি খাত: আগের বছর বৃদ্ধির হার ছিল ৮.১%, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১.৬%-এ।
- বিদ্যুৎ খাত: এখানেও উন্নতির গতি মন্থর।
- ভোগ্যপণ্য: বাজারের প্রত্যাশার অনেকটাই নীচে।
💬 বিশ্লেষকদের মত কী বলছে?
অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী বলেন, “বিশ্বজুড়েই চাহিদার অভাব দেখা দিয়েছে। তারই প্রভাব পড়েছে ভারতের শিল্প খাতেও। মূল সমস্যার শিকড় চাহিদার দুর্বলতা।”
অন্যদিকে অভিরূপ সরকার মনে করেন, “এটা কেবল ভারতের একক সমস্যা নয়। বিশ্ব অর্থনীতি নানা জটিলতায় ধীরে চলছে। আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামাও ভারতের উপর প্রভাব ফেলছে। তবে পরিষেবা খাতে ভারতের অগ্রগতি তুলনামূলক ভালো।”
রাজেন্দ্র পরামানিক, পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক, জানাচ্ছেন, “ফেব্রুয়ারিতে লিপ ইয়ার না থাকায় হিসাবের তারতম্য হয়েছে। পাশাপাশি, বিদ্যুৎ ও উৎপাদন ক্ষেত্রের দুর্বল পারফরম্যান্সও দায়ী। তবে আগামিদিনে শুল্ক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা উৎপাদনকে আরও সমস্যায় ফেলতে পারে।”
🛠️ সমস্যা মেটাতে কী উদ্যোগ?
- বাজেটে কর ছাড়: মধ্যবিত্তের হাতে খরচযোগ্য অর্থ বাড়াতে চেষ্টারত কেন্দ্র।
- রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানো: ঋণগ্রহীতাদের জন্য খরচ কমাতে দুই দফায় সুদ হার কমানো হয়েছে।
- রফতানি বাড়ানোর তাগিদ: দেশীয় উৎপাদন ঘুরে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
🔚 উপসংহার
চাহিদা যতক্ষণ না বাড়ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত শিল্প খাতও গতি পাবে না—এ যেন এখনকার বাস্তব চিত্র। পরিকাঠামোতে উন্নয়ন, সাধারণ মানুষের হাতে টাকার জোগান বাড়ানো এবং রফতানির নতুন রাস্তা খোঁজা এখন সরকারের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। নয়তো উৎপাদনের এই হোঁচট দেশীয় অর্থনীতির গতি আরও থমকে দিতে পারে।
চুম্বন নয়, কবিতার ছোঁয়ায় প্রেম ফুটল শ্রাবন্তীর খোলা পিঠে!

