শিলিগুড়িতে পরিত্যক্ত জমির পাঁচিলে গ্রেনেড!
শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার পবিত্রনগর এলাকায় শুক্রবার এক অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা পরিত্যক্ত জমির উঁচু পাঁচিলের খোপে একটি গ্রেনেড পড়ে থাকতে দেখেন। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। খবর যায় পুলিশে, এবং দ্রুতই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সেনার একটি বিশেষ দল।
কীভাবে এলো এই গ্রেনেড? বিভ্রান্ত স্থানীয়রা
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে কয়েকজন বাসিন্দা প্রথম গ্রেনেডটি দেখতে পান। তবে সেটি আসলে কী, আদৌ কার্যকর আছে কিনা—তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। যখন গ্রেনেডের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে, তখনই এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। পুলিশে খবর দেওয়া হলে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন।
কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—পরিত্যক্ত জমির পাঁচিলে এই বিপজ্জনক বিস্ফোরক কীভাবে এলো? কোনো দুষ্কৃতীর কাজ, নাকি পুরনো কোনও সামরিক অস্ত্র? বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনও বিভ্রান্ত।
সেনার অভিযানে গ্রেনেড উদ্ধার
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পুলিশ সেনাকে খবর দেয়। শুক্রবার দুপুর নাগাদ সেনার একটি বিশেষ দল এসে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। গেটের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করা হয় এবং বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে পুরো এলাকা তল্লাশি করা হয়। সেনাকর্মীরা অবশেষে গ্রেনেডটি উদ্ধার করেন এবং সেটিকে নিরাপদে নিয়ে যান।
সেনার তরফে অর্চনা পটেল নামে এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা ঘটনাস্থলে এসে নিশ্চিত হয়েছি, এটি একটি গ্রেনেড। তবে এটি সক্রিয় কিনা, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আমাদের বিশেষজ্ঞ দল এটি পরীক্ষা করবে।”
আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা
এই ঘটনায় এলাকার মানুষ যথেষ্ট আতঙ্কিত। স্থানীয় বাসিন্দা রবি রায় বলেন, “আমরা কখনো ভাবিনি, আমাদের পাড়ার পরিত্যক্ত জমিতে এমন কিছু পাওয়া যাবে। এটা কীভাবে এখানে এল, কে বা কারা রেখে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না। সেনারা এসে গ্রেনেডটি নিয়ে গেছে, তবে আমরা এখনো আতঙ্কে আছি।”
তদন্ত শুরু পুলিশের
সেনা গ্রেনেডটি নিয়ে গেলেও, পুলিশের তরফে বিষয়টি নিয়ে আরও গভীর তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, আশেপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। বিশেষ করে এই গ্রেনেডটি পুরনো নাকি সাম্প্রতিককালে কেউ এনে ফেলেছে, তা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যদি এই ঘটনায় কোনো সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়, তবে আরও তদন্ত চালানো হবে এবং প্রয়োজনে সেনার বোম্ব স্কোয়াডকে ডাকা হবে।
সতর্ক থাকার বার্তা প্রশাসনের
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন সকল বাসিন্দাকে যেকোনো অস্বাভাবিক বস্তু দেখলেই দ্রুত পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছে। আতঙ্কের কারণ না হলেও, এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনায় সতর্কতা অবলম্বন করাই সবচেয়ে জরুরি।
এই মুহূর্তে, গ্রেনেডটি কোথা থেকে এল, কে বা কারা এটি এখানে রাখল, আদৌ এটি বিপজ্জনক ছিল কিনা—সব কিছুই তদন্ত সাপেক্ষ। তবে সেনা ও পুলিশের যৌথ পদক্ষেপে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, যা বাসিন্দাদের জন্য খানিকটা স্বস্তির খবর। 🚔💣
চাকরি বাতিলের ধাক্কায় শিক্ষক সঙ্কট, রাজ্যের স্কুলগুলিতে অনিশ্চয়তা