Friday, February 21, 2025

শিবপুরে দুর্ঘটনায় দুই মৃত্যু, গিয়াসউদ্দিনের নামফলক লাগানো গাড়ি ঘিরে বিতর্ক

Share

হাওড়ার শিবপুরে গভীর রাতে একটি মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন চালক-সহ দুই জন। শনিবার রাত প্রায় ১টা নাগাদ শিবপুরের ফোরশোর রোডে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেলারে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে আসা গাড়ি ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনায় নিহত দুই জনের পাশাপাশি তিন জন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির মালিকানা নিয়ে জল্পনা

দুর্ঘটনার পরে স্থানীয়রা দেখতে পান গাড়িটিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট পশ্চিমের বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লার নামফলক লাগানো রয়েছে। যদিও বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি তাঁর নয়। তিনি বলেন, “আমার নিজের ব্যবহৃত স্করপিও গাড়িটি সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় রয়েছে এবং কোনো দুর্ঘটনায় পড়েনি। নামফলক লাগানো অন্য কোনও গাড়ির বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”

কী ঘটেছিল সেই রাতে?

জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ওয়াটগঞ্জের বাসিন্দা ২৫ বছরের মোস্তাক খান। গাড়িতে ছিলেন আরও চার জন যাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়িটি প্রচণ্ড গতিতে ছুটছিল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেলারের পিছনে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষের তীব্রতায় গাড়ির সামনের অংশ ট্রেলারের নিচে ঢুকে যায়, আর যাত্রীরা গাড়ির মধ্যে আটকে পড়েন।

শিবপুর থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাত্রীদের উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে মোস্তাক এবং আরেক যাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বাকিদের অবস্থা সংকটজনক বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পরিকল্পনা করছে।

পরিবারের কান্নার রোল

মোস্তাকের বাবা মহম্মদ মুখতার জানান, দুর্ঘটনার দিন তাঁদের বাঁকড়ার বাড়িতে পুজোর আয়োজন ছিল। তিনি বলেন, “আমার ছেলে গাড়ি নিয়ে এসেছিল। ফেরার পথে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে এসে দেখি আমার ছেলে এবং আরেক আত্মীয় মারা গিয়েছে। বাকিদের অবস্থাও সঙ্কটজনক।” তিনি আরও জানান, তাঁর ছেলে বিধায়ক গিয়াসউদ্দিনের গাড়ি চালাত এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিও সেই গাড়ি হতে পারে।

বিধায়কের প্রতিক্রিয়া

বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা দুর্ঘটনার সঙ্গে নিজের গাড়ির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমার গাড়ি কোনও দুর্ঘটনায় পড়েনি এবং আমাদের পরিবার সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি কার, তা নিয়ে আমি কিছু জানি না।”

পুলিশি তদন্ত এবং পরবর্তী পদক্ষেপ

পুলিশ দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে তদন্ত চালাচ্ছে। প্রাথমিক অনুমান, গাড়ির উচ্চ গতিই দুর্ঘটনার মূল কারণ। পাশাপাশি, গাড়ির মালিকানা এবং বিধায়কের নামফলক লাগানোর বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিধায়কের নাম জড়ানোয় বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে। পুলিশি তদন্তের পরে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Read more

Local News