Monday, December 1, 2025

শিক্ষা রাজ্যের অধিকার, কেন্দ্র জোর করতে পারে না—নয়া শিক্ষানীতিকে ঘিরে সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায়

Share

শিক্ষা রাজ্যের অধিকার!

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিকে (NEP) কেন্দ্র কতটা বলপূর্বক রাজ্যে চালু করতে পারে, তা নিয়ে চলছিল তীব্র বিতর্ক। সেই বিতর্কে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল—শিক্ষানীতি নিয়ে কোনও রাজ্যকে কেন্দ্র জোর করে কিছু মানতে বাধ্য করতে পারে না। সংবিধান অনুযায়ী শিক্ষা যৌথ তালিকাভুক্ত, তাই রাজ্যের মতামত উপেক্ষা করে কেন্দ্র unilateral সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

শীর্ষ আদালতের এই রায়ে স্বস্তি পেল পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল-সহ একাধিক অবিজেপি শাসিত রাজ্য, যারা শুরু থেকেই কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতির বিরোধিতা করে আসছিল। মামলাটি দায়ের করেছিলেন আইনজীবী জিএস মানি। তাঁর বক্তব্য ছিল, সব রাজ্যের উপর জাতীয় শিক্ষানীতি প্রযোজ্য হওয়া উচিত এবং তা বাস্তবায়ন না করাটা সংবিধান লঙ্ঘন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, তিন ভাষার নীতির বিরোধিতা করে কিছু রাজ্য এই ইস্যুকে রাজনৈতিক রং দিচ্ছে।

কিন্তু বিচারপতি জেবি পারদিওয়াল ও বিচারপতি আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর দাবি নস্যাৎ করে জানিয়ে দেয়, “জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য কোনও রাজ্যকে বাধ্য করা যায় না। কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্মিলিত অংশগ্রহণে শিক্ষাব্যবস্থার রূপরেখা নির্ধারিত হওয়া উচিত।”

সুপ্রিম কোর্ট আরও জানায়, কোনও রাজ্যের সিদ্ধান্ত যদি নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে, সেই ক্ষেত্রেই কেবল আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় নীতিকে অগ্রাহ্য করলেও যতক্ষণ না জনগণের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করবে না।

নয়া শিক্ষানীতি ২০২০ সালে কেন্দ্র চালু করে। সেখানে প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষা শেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়। দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি বা ইংরেজি এবং তৃতীয় ভাষা হিসেবে কোনও প্রাচীন ভারতীয় ভাষা গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তামিলনাড়ু-সহ একাধিক রাজ্য মনে করে, এইভাবে হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা সাংবিধানিক ভারসাম্য নষ্ট করে।

তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন একাধিকবার এই নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, এই নীতি কেবলমাত্র ‘এক দেশ, এক সংস্কৃতি’র ধারণা চাপিয়ে দিতে চাইছে এবং বহুভাষিক ভারতে একমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি আরোপ করছে। অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্র তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যকে ‘শিক্ষাবিস্তারের অনুদান’ আটকে দিয়ে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছে।

এমন এক রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক বিতর্কের আবহেই সুপ্রিম কোর্টের এই রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রায়টি রাজ্যগুলির সংবিধানিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে রইল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

‘ব্রহ্মস’ নয়, কেন ‘হাতুড়ি’র ঘা? অপারেশন ‘সিঁদুর’-এ ভারত বেছে নিল স্ক্যাল্প ও হ্যামার, কারণ জানেন?

Read more

Local News