Monday, December 1, 2025

শিক্ষার মন্দিরে নিরাপত্তাহীনতা! দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে পুলিশ পিকেট চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ অধ্যাপকরা

Share

শিক্ষার মন্দিরে নিরাপত্তাহীনতা!

কলেজ মানেই পড়াশোনার জায়গা, বিতর্কের জায়গা, যুক্তির জায়গা। কিন্তু যখন সেই শিক্ষাঙ্গনেই বারবার অশান্তি, হুমকি, এমনকি প্রাণনাশের আশঙ্কাও উঠে আসে—তখন আর একে শুধু ‘প্রতিবাদ’ বলা যায় না। ঠিক এমনই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজ। এই কলেজের একাধিক অধ্যাপক এবার কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন, যাতে কলেজ চত্বরে অবিলম্বে পুলিশ পিকেট বসানো হয়।

কী ঘটেছে কলেজে?

সম্প্রতি কলেজে এক ছাত্র সংগঠনের একাংশের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো, হুমকি দেওয়া, এমনকি কলেজের কর্মীদের উপর মনস্তাত্ত্বিক চাপে রাখার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, এই ছাত্রদের আচরণ ক্রমশ মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে, যা শিক্ষা ও পঠন-পাঠনের পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

একজন অধ্যাপকের কথায়, “ক্লাসে আমরা মুক্তচিন্তার কথা বলি, কিন্তু আজ নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।” এমন অবস্থায় শুধু প্রশাসনিক পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন তাঁরা। তাই বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অধ্যাপক ও কর্মীরা।

আদালতে কী দাবি জানানো হয়েছে?

হাই কোর্টে যে পিটিশন জমা পড়েছে, তাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, কলেজে স্থায়ী পুলিশ পিকেট বসানোর প্রয়োজনীয়তা। পাশাপাশি, কলেজে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ও সিসিটিভি নজরদারিরও দাবি উঠেছে। তাঁদের বক্তব্য, ছাত্ররাজনীতি থাকতেই পারে, কিন্তু তার নামে ব্যক্তিগত হুমকি, ভয় দেখানো ও শিক্ষকের কাজে বাধা দেওয়াকে বরদাস্ত করা যায় না।

কলেজ কতৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনার বিষয়ে কলেজ কতৃপক্ষ মুখ খুলতে রাজি হয়নি এখনই। যদিও অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, কলেজ কর্তৃপক্ষও সমস্যার গভীরতা অনুধাবন করছেন এবং বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা চলছে।

ছাত্র সংগঠনের পাল্টা যুক্তি

অভিযুক্ত ছাত্র সংগঠনের এক প্রতিনিধির দাবি, “আমরা কোনও হুমকি দিইনি। বরং কিছু শিক্ষকের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আমাদের প্রতিবাদ করতে বাধ্য করেছে।” তাঁদের মতে, পুলিশ পিকেট বসানো মানে ছাত্রদের দমন করা, যা গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘনের সামিল।

শিক্ষার পরিবেশে এমন উত্তেজনা কেন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে গত কয়েক বছরে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক যে রকম উত্তপ্ত হয়েছে, তা উদ্বেগজনক। রাজনীতি, আদর্শগত মতভেদ কিংবা প্রশাসনিক দুর্বলতা—সব মিলিয়ে শিক্ষাঙ্গনে যে অস্থিরতা বাড়ছে, তা মানসিক সুরক্ষা ও শিক্ষার মান—দুটোকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে।

উপসংহার

দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে পুলিশ পিকেট বসানো হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল—শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু পঠন-পাঠনই নয়, আজ তার চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন নিরাপদ পরিবেশ। কারণ, ভয়ের মধ্যে কখনও জ্ঞানচর্চা সম্ভব নয়।

বিশ্বে তেলের দাম আকাশছোঁয়া, রাশিয়া থেকে কিনে ভারতে স্থিতিশীলতা!

Read more

Local News