শাহের সফরের মাঝে সুকান্তের গৃহে শুভেন্দু
রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪। প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শুনতে দুই বিজেপি নেতা একত্রিত হলেন। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিউ টাউনের সুকান্তের বাসভবনে বসে প্রধানমন্ত্রীর রেডিও অনুষ্ঠানটি শুনলেন। প্রতি মাসের শেষ রবিবার প্রধানমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠান হয় এবং এই সময়ে বিজেপির সাংসদ ও বিধায়কেরা নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় দলের কর্মীদের সঙ্গে বসে এটি শোনেন। তবে, এবারের পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন।
শহরে অমিত শাহের সফর
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতায় অবস্থান করছেন এবং তিনি বনগাঁয় এক সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। শাহের কলকাতায় আসার খবরের সঙ্গে সঙ্গে শুভেন্দু এবং সুকান্তের একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান শোনার বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দেয়। শাহের ফিরে আসার পর তিনি সুকান্ত এবং শুভেন্দুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলেও খবর রয়েছে।
‘মন কি বাত’ শুনে শুভেন্দু-সুকান্তের সম্পর্ক
প্রতিটি মাসের শেষ রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শোনার জন্য সাধারণত সাংসদ ও বিধায়কেরা তাদের নির্বাচনী এলাকাতে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মিলে বসেন। কিন্তু রবিবার উভয় নেতা কলকাতায় উপস্থিত ছিলেন, ফলে তাঁরা একত্রে মোদীর বক্তব্য শুনতে পারলেন। এর ফলে সুকান্ত এবং শুভেন্দুর মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে নতুন আলোচনার সূচনা হলো। বিগত সময়ে শুভেন্দুর সুকান্তের প্রতি দূরত্ব এবং তার মন্তব্য নিয়ে বিজেপি অন্দরে আলোচনা ছিল।
রাজনৈতিক সমীকরণের পরিবর্তন
শুভেন্দুর সুকান্তের সঙ্গে ‘মন কি বাত’ শোনা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিগত কিছু সময় ধরে শুভেন্দু বলেছিলেন, “আমি সংগঠনের কেউ নই।” তার পরের দিনগুলোতে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। তাই রবিবার সুকান্তের বাসভবনে বসে শুভেন্দুর অনুষ্ঠান শোনার ঘটনা রাজনৈতিক সমীকরণের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাংবাদিক সম্মেলনে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন প্রসঙ্গ
‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শোনার পর শুভেন্দু এবং সুকান্ত একসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে তাঁদের অভিমত প্রকাশ করেন। তারা জানান, আন্দোলনের শুরুটা ভাল হলেও শেষ পর্যন্ত তা আশানুরূপ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ডাক্তারদের বৈঠক করার উদ্যোগকে তাঁরা সমালোচনা করেছেন।
এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে দেখা যায়, বিজেপির রাজ্য নেতাদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং একাত্মতার প্রয়োজনীয়তা প্রবলভাবে অনুভূত হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শাহের সফর, শুভেন্দু-সুকান্তের একত্রে বসে অনুষ্ঠান শোনা এবং জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য—এগুলো সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।