Monday, May 12, 2025

শালবনিতে ‘ভবিষ্যতের আলো’ জ্বালাতে এলেন মমতা, পাশে সৌরভ—১৬ হাজার কোটির তাপবিদ্যুৎে জ্বলে উঠল আশা

Share

শালবনিতে ‘ভবিষ্যতের আলো’ জ্বালাতে এলেন মমতা!

এক সময়ের শূন্য মাঠ, মাওবাদী আতঙ্ক আর থমকে থাকা স্বপ্নের ঠিকানায় এ বার জ্বলতে চলেছে ১৬ হাজার কোটির উন্নয়নের আলো। সোমবার শালবনিতে জিন্দাল গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে থাকবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। এই প্রকল্প শুধু দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরের হাজার হাজার মানুষের জীবনের গতি বদলের আশার নাম।

শালবনির ‘সাধ’ পূরণে দিশা

মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছেন, শালবনিতে ৮০০ মেগাওয়াট করে দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে জিন্দাল গোষ্ঠী—১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি! শুধু বিদ্যুৎ নয়, একই সঙ্গে গড়ে তোলা হবে একাধিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। প্রশাসনের দাবি, এর ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরে সৃষ্টি হবে কয়েক হাজার কর্মসংস্থান। দীর্ঘদিনের দাবি, দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা—সব মিলে শালবনির মানুষজনের চোখে এখন শুধুই নতুন ভোরের অপেক্ষা।

যেখান থেকে শুরু, সেখানেই ফেরা

২০০৮ সালের ২ নভেম্বর—এক বিভীষিকাময় দিন। সেদিন মাওবাদীদের ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল শালবনি। থেমে গিয়েছিল শিল্প স্থাপনের স্বপ্ন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়েই ছিল বিস্ফোরণ, সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন ইস্পাতমন্ত্রীও। সেই ঘটনার পর আর এগোয়নি শিল্প প্রকল্প। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল, ২০১৩-য় ফের শুরু হয় জমি নিয়ে আন্দোলন। সেই জমির একাংশে সিমেন্ট কারখানা হলেও বাকি ৮০% জমি পড়ে ছিল ফেলে। অবশেষে সেই জমিই হতে চলেছে জঙ্গলমহলের আশার বীজ।

কর্মসংস্থানের নয়া জানালা

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও গোয়ালতোড়ে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং একাধিক নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন হবে মুখ্যমন্ত্রীর সফরে। সোমবার রাতটা মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে থেকে মঙ্গলবার তিনি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মেদিনীপুর কলেজ মাঠে। এই প্রকল্পগুলি শুধু বিদ্যুৎ নয়, নতুন কর্মসংস্থানের রাস্তা খুলে দেবে বলেই আশা করছে প্রশাসন।

নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো, কারণ ইতিহাস রয়ে গেছে

যদিও বর্তমানে মাওবাদীদের তেমন উপস্থিতি নেই, তবুও মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া। দফায় দফায় বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন। কারণ, ২০০৮-এর ঘটনার স্মৃতি আজও টাটকা বহু মানুষের মনে।

বিরোধীর কটাক্ষ, নবান্নের প্রত্যুত্তর

বিজেপি অবশ্য বলছে, এই শিলান্যাস আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির অঙ্গ। তৃণমূল চাইছে উন্নয়নের নামে মানুষের মন জয় করতে। তবে নবান্নর মতে, ভোট নয়, এটা বহু বছরের বঞ্চনার অবসান। প্রকল্পের বাস্তবায়নই সেই প্রমাণ দেবে।

শেষ কথা

এক সময় যেখানে বিস্ফোরণ থামিয়ে দিয়েছিল উন্নয়নের গান, আজ সেখানেই ফিরছে স্বপ্ন। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে, সৌরভের উপস্থিতিতে এবং জিন্দালের বিনিয়োগে আবারও আলো জ্বলে উঠতে চলেছে শালবনিতে। আর তার ছায়ায় হাঁটবে জঙ্গলমহলের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

বাঙালির পাতে ভাত নয়, থাকবে ঘি-মাখন-প্রোটিন! ডায়াবেটিস আর মোটা হওয়া আটকাবে এই নতুন ডায়েটেই?

Read more

Local News