Monday, December 1, 2025

শান্তির পথে ছোট্ট পদক্ষেপ: তুরস্ক বৈঠকের পর রাশিয়ার কাছ থেকে ১২১২ সেনার দেহ ফিরল ইউক্রেনে

Share

তুরস্ক বৈঠকের পর রাশিয়ার কাছ থেকে ১২১২ সেনার দেহ ফিরল ইউক্রেনে!

তীব্র যুদ্ধের আবহেও যখন শান্তির সম্ভাবনা ক্ষীণ, তখন কিছু ছোট পদক্ষেপও আশার আলো দেখায়। তেমনই এক দৃশ্য দেখা গেল রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে, যেখানে তুরস্কের ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনার রেশ টেনে রাশিয়া নিজেদের প্রতিশ্রুতি রেখেছে। সেই আলোচনায় দুই দেশ সম্মত হয়েছিল একে অপরের মৃত সেনাদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রবিবার প্রথম দফায় রাশিয়া একটি বিশেষ ট্রেনের মাধ্যমে ১২১২ জন ইউক্রেনীয় সেনার মরদেহ ইউক্রেনের হাতে তুলে দেয়।

এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেন রুশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল আলেকজান্ডার জ়োরিন। রুশ সংবাদমাধ্যম ‘তাস’-কে তিনি জানিয়েছেন, নিহত সেনাদের অধিকাংশকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যাঁদের শনাক্ত করা যায়নি, তাঁদের পরিচয় নির্ধারণ করা হয়েছে তাদের সামরিক পোশাক এবং যুদ্ধক্ষেত্রের নির্দিষ্ট স্থান থেকে উদ্ধারের ভিত্তিতে। এতদিনে যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়ে ধোঁয়াশায় ছিলেন, তাঁদের জন্য এটি এক ধরনের মানসিক বন্ধনের সূত্র হয়ে উঠতে পারে।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এটি এমন এক সঙ্কট যা প্রতিদিন শুধু সীমান্তেই নয়, কাঁপিয়ে দিচ্ছে গোটা বিশ্বকে। রাশিয়ার মিসাইল হামলায় ইউক্রেনের একের পর এক শহর বিধ্বস্ত হয়েছে, পাল্টা প্রত্যাঘাতে রাশিয়ার বহু সেনাও নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের এই ভয়াবহতা রুখতে আন্তর্জাতিক স্তরে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও, বাস্তবিক অর্থে যুদ্ধ থামার মতো কোনো দীর্ঘস্থায়ী রফা হয়নি। তবে এই মৃতদেহ বিনিময়ের মতো পদক্ষেপ সেই যুদ্ধবিরতির পথে অন্তত একটি মানবিক ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকেরা।

ইস্তানবুল বৈঠকে দুই পক্ষ আরও সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা মোট ১২,০০০ সেনার দেহ একে অপরকে ফিরিয়ে দেবে। রাশিয়া প্রথম ধাপে এই ১২১২ জনের মরদেহ ফেরত পাঠিয়ে নিজেদের দায়বদ্ধতা দেখাল। এর পরবর্তী পর্যায়ে ইউক্রেনকেও রুশ সেনাদের মৃতদেহ ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে।

এই মানবিক উদ্যোগ যতটা বাস্তবিক প্রয়োজনীয়, ততটাই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যুদ্ধক্ষেত্রে নিহতদের যথাযথ সম্মান দেওয়া শুধু সামরিক শালীনতা নয়, এটি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। শান্তির পথে যে একমাত্র রক্ত নয়, শ্রদ্ধা এবং সহানুভূতির প্রয়োজন—সেই উপলব্ধিও এই ধরনের কাজের মাধ্যমে তুলে ধরা যায়।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার এই ছোট পদক্ষেপ যদি বড় কোনো আলোচনার ভিত্তি তৈরি করে, তবে হয়তো ভবিষ্যতের ইতিহাসে এটি এক আশাব্যঞ্জক পরিণতির সূচনা বলেই চিহ্নিত হবে।

টাটকা লাউ কিনবেন কীভাবে? চেনুন কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক মেশানো সব্জি

Read more

Local News