Tuesday, February 11, 2025

লেখাপড়ার মান যাচাই করতে হবে পরীক্ষা, স্কুলে স্কুলে চলছে প্রস্তুতি

Share

লেখাপড়ার মান যাচাই

রাজ্যের স্কুলগুলিতে এবার নতুন পরীক্ষা হতে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের স্কুলপড়ুয়াদের পড়াশোনার মান মূল্যায়ন করা হবে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক আগামী ৪ ডিসেম্বর ‘ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে’ (ন্যাস) পরীক্ষা শুরু করতে চলেছে, যা দেশের বিভিন্ন স্কুলের তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাগত স্তরের পর্যালোচনা করা হবে।

রাজ্যের স্কুলগুলো ইতিমধ্যেই এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ন্যাশ পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের ছাত্রদের কীভাবে পড়াশোনা হচ্ছে, তার একটা সামগ্রিক ধারণা পাওয়া যাবে। তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণির ছাত্ররা এই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। তৃতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্ররা পরীক্ষা দেবে ভাষা, অঙ্ক এবং ‘আমাদের চারপাশের পৃথিবী’ (সামাজিক বিজ্ঞান) বিষয়ে। নবম শ্রেণির ছাত্ররা পরীক্ষা দেবে ভাষা, অঙ্ক এবং সমাজবিজ্ঞানের উপর। তৃতীয় এবং ষষ্ঠ শ্রেণির পরীক্ষার সময় হবে ৯০ মিনিট, আর নবম শ্রেণির পরীক্ষার সময়সীমা হবে ২ ঘণ্টা।

এবারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী স্কুলগুলো আগে থেকে ঘোষণা করা হয় না। অর্থাৎ, কোন স্কুলের কোন শ্রেণির ছাত্ররা পরীক্ষায় বসবে, তা পূর্বেই নির্ধারিত থাকবে না। এর আগেও যাদবপুর বিদ্যাপীঠের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্ররা এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানিয়েছেন, একটি স্কুল থেকে শুধুমাত্র এক ক্লাসেরই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। অর্থাৎ, এক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণি যদি পরীক্ষায় অংশ নেয়, তবে সেই বছর ওই স্কুলের ষষ্ঠ বা নবম শ্রেণি পরীক্ষায় বসবে না। এই নিয়ম তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণির ক্ষেত্রে একরকমই প্রযোজ্য।

কলকাতার বিভিন্ন স্কুলেও ন্যাশ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি চলছে। কলকাতা থেকে এবারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে ২৭টি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্ররা, ২৪টি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণি এবং ৩২টি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্ররা। পরীক্ষার দিন পরীক্ষকরা স্কুলে গিয়ে তৃতীয়, ষষ্ঠ বা নবম শ্রেণির ৩০ জন করে ছাত্র নির্বাচন করবেন এবং তাদের পরীক্ষায় বসতে বলা হবে। পরীক্ষায় এমসিকিউ (মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন) থাকবে, আর ছাত্ররা ওএমআর শিটে (অপারেটিভ মেথড রেকর্ড) পরীক্ষা দেবেন।

স্কুলগুলোর শিক্ষকদের মতে, পরীক্ষার জন্য প্রতিটি স্কুলের পড়ুয়াদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এই প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে ওএমআর শিটে কীভাবে সঠিকভাবে উত্তর দিতে হয়, সেই বিষয়ে ছাত্রদের গাইডলাইন দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার কয়েক দিন আগে কোন স্কুলকে পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে, তা জানানো হবে।

ন্যাশ পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী কিছু মাস পরে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক দেশের স্কুলশিক্ষার মান সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করবে। এতে স্কুল শিক্ষার উন্নয়ন এবং ছাত্রদের শেখার স্তরের উন্নতি কেমন হচ্ছে, তা বিশ্লেষণ করা হবে। এই সমীক্ষার ফলাফল দেশব্যাপী শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ উন্নয়নমূলক পদক্ষেপগুলির জন্য সাহায্য করবে।

এভাবে, ন্যাশ পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক মান যাচাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, যা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য নতুন দিশা দেখাবে।

Read more

Local News