লন্ডনে মমতার সফর!
হিমশীতল না হলেও লন্ডনে নামার সময় তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ছয় দিনের জন্য ব্রিটেনে পা রাখলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মসূচি শুরু হবে সোমবার থেকে, তবে তার আগেই কিছু টুকরো মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি হল।
কেকের মিষ্টতা
দুবাই থেকে লন্ডনের দীর্ঘ আট ঘণ্টার ফ্লাইটে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানালেন এমিরেটসের বিমানবালারা। শুভযাত্রার শুভেচ্ছা জানিয়ে কেক হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। কেক কেটে নয়, বরং সহযাত্রীদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তিনি। সবার মুখে হাসি, হাততালিতে মুখরিত হল বিমান। উড়ানের পুরো সময়টাই প্রায় জেগে কাটালেন মমতা, খোঁজ নিলেন সফরসঙ্গীদের আরাম-আয়েশের।
মিসড সেলফির আক্ষেপ
বিমানযাত্রার সহযাত্রী ছিলেন এক বাঙালি তরুণ, পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। কলকাতার বাসিন্দা এই প্রবাসী রিডিং শহরে চাকরি করেন। স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে ছুটি কাটিয়ে ফিরছিলেন লন্ডনে। মমতার সঙ্গে ছবি তোলার আশায় ছিলেন, বললেন এর আগে কোহলি-ধোনির সঙ্গেও শপিং মলে ছবি তুলেছেন। তবে এই যাত্রায় সেই সৌভাগ্য আর হল না। বিমান অবতরণের পর মমতা দ্রুত বেরিয়ে যান। হতাশ সেই তরুণের শেষ চেষ্টা ছিল তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে কথোপকথন। রেকর্ডের ঝুলি ফাঁকা রাখতে চাননি তিনি।
প্রতিবাদের শব্দ
লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়ার ছিল বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল। মহাত্মা গান্ধী, উইনস্টন চার্চিল ও নেলসন ম্যান্ডেলার মূর্তির পাশে ইউক্রেনীয়দের প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছিল। নীল-হলুদ পতাকার ঢেউ আর ‘পুতিন নিপাত যাক’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছিল চারপাশ। শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভের ধারেকাছে ছিল না কোনো পুলিশি উপস্থিতি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি বরাবরই গণআন্দোলনের প্রতীক, কি বিক্ষোভ দেখে দাঁড়িয়ে সহমর্মিতা জানাতেন? হয়তো ক্লান্তি ছিল, হয়তো সময়ের অভাব। তবে সোমবার থেকে শুরু হবে তাঁর ব্যস্ততম সরকারি সফর, যেখানে ব্রিটেনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এবং সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই সফরের প্রতিটি মুহূর্তই পশ্চিমবঙ্গের আন্তর্জাতিক যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। মমতার সফর কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এর ছাপ পড়বে ভবিষ্যতের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের পরতে পরতে।