Monday, December 1, 2025

রোহিঙ্গারা কি শরণার্থী না অবৈধ অনুপ্রবেশকারী? প্রথমে সেই সিদ্ধান্ত জরুরি — সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট বার্তা

Share

রোহিঙ্গারা কি শরণার্থী না অবৈধ অনুপ্রবেশকারী?

রোহিঙ্গা ইস্যুতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বহু মামলার জট জমেছে। তবে সেই জট কাটাতে এবার এক ধাপ এগোল সুপ্রিম কোর্ট। তিন বিচারপতির একটি বেঞ্চ জানিয়ে দিল, এই বিতর্কিত বিষয়টির মূলে পৌঁছাতে হলে প্রথমে একটি প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট করতে হবে— রোহিঙ্গারা আদৌ শরণার্থী, না কি তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী?

বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত রোহিঙ্গাদের ঘিরে হওয়া একগুচ্ছ মামলাকে তিনটি ভাগে ভাগ করে শুনানির সিদ্ধান্ত নেয়। বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি এন. কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এখন থেকে প্রতি বুধবার এই সংক্রান্ত মামলাগুলি শোনা হবে, তবে বিষয় অনুযায়ী ভাগ করে।

কী কী ভাগে ভাগ করা হল মামলাগুলিকে?

প্রথম ভাগে থাকছে, রোহিঙ্গাদের আইনগত পরিচয় সংক্রান্ত বিষয়— তারা শরণার্থী কি না।
দ্বিতীয় ভাগে আছে, তাঁদের সমস্যাবলী— যেমন আশ্রয় শিবিরে পানীয় জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি।
তৃতীয় একটি মামলাকে আদালত জানিয়েছে, তা রোহিঙ্গা ইস্যুর বাইরে, সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রসঙ্গের সঙ্গে যুক্ত।

আদালতের মৌলিক প্রশ্ন

বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “প্রথম যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং তুলনামূলকভাবে সহজ— তা হল, রোহিঙ্গারা কি শরণার্থী না অবৈধ অনুপ্রবেশকারী?” এই প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত, তাঁদের নিয়ে পরবর্তী আইনগত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না।

কী থাকছে বিচারপর্বে?

এই মামলাগুলির মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • রোহিঙ্গারা যদি শরণার্থী হিসেবে গণ্য হন, তবে তাঁরা কী ধরনের সুরক্ষা বা অধিকার পেতে পারেন?
  • আবার যদি তাঁরা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বিবেচিত হন, তবে তাঁদের আটক বা বিতাড়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা কতটা আইনসম্মত?
  • আদালতের আরও প্রশ্ন, “এমন যদি হয়, তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, তাহলেও কি তাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখা যেতে পারে? না কি জামিন পাওয়ার অধিকার থাকা উচিত?”

এছাড়া আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে এসেছে— যাঁরা আটক হননি এবং আশ্রয় শিবিরে রয়েছেন, তাঁরা কি ন্যূনতম মৌলিক পরিষেবা পাচ্ছেন? এই পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের দায়িত্ব কতখানি, তা-ও খতিয়ে দেখবে আদালত।

অতীতের কিছু ঘটনা

উল্লেখ্য, এর আগেও রোহিঙ্গা বিতাড়ন ইস্যুতে আদালতে বহু আবেদন জমা পড়ে। গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলায় আবেদনকারীদের কড়া ভাষায় সতর্ক করে বলেছিল, “আজগুবি গল্প নিয়ে আদালতে আসবেন না।” ওই মামলায় বলা হয়েছিল, ৪৩ জন রোহিঙ্গা নারী-শিশুকে আন্দামান সাগর হয়ে মায়ানমারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, যা আদালত গ্রহণ করেনি।

আদালত আরও স্পষ্ট করে দেয়, যদি কোনও রোহিঙ্গা ভারতীয় আইন অনুসারে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হন, তবে তাঁদের বিতাড়ন বৈধ। তবে সেই প্রক্রিয়াও হতে হবে আইনমাফিক, মানবিক শর্ত মেনে।

সারাংশে, রোহিঙ্গা প্রশ্নে দেশের শীর্ষ আদালত এখন এক সুস্পষ্ট পথে হাঁটছে— আগে ঠিক হোক তারা কারা, তারপরই বিচার হবে বাকিদের।

সুনামির আতঙ্কে থমকে নেই লিভারপুলের জাপান সফর, মারিয়ানোসের বিরুদ্ধে জয়ের আনন্দ

Read more

Local News