Monday, December 1, 2025

রিষড়ায় ব্যবসায়ীর মাথায় গুলি করে বিতর্কের ঝড়: অভিযুক্তের তৃণমূলের নাম করে দাবি, তোলপাড় রাজনীতি

Share

রিষড়ায় ব্যবসায়ীর মাথায় গুলি

হুগলির রিষড়ায় এক ব্যবসায়ীর মাথায় গুলি করে অভিযুক্ত যুবকের তৃণমূল দলের নাম করে দাবির পর উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত রঞ্জন যাদবকে গ্রেফতার করেছে। তবে পুলিশের ঘেরাটোপের মধ্যেও তাঁর আত্মবিশ্বাস এবং দম্ভ দেখে রীতিমতো চমকে যায় পুলিশসহ স্থানীয় জনতা।

গত মঙ্গলবার সকালে রিষড়ার বাগখাল এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী শামসুদ্দিন আনসারি তাঁর পরিচিত একজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। ঠিক সেই সময় অভিযুক্ত রঞ্জন যাদব এসে তাঁকে মাথায় গুলি করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পরেই পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে এবং রঞ্জনকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তকে উত্তরপাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হলে সাংবাদিকরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। তখন নিজের ঠোঁটের গোঁফে পাক দিয়ে রঞ্জন বলেন, ‘‘আমি তৃণমূল করি!’’ এরপর তিনি দাবি করেন, এক বছর আগে শামসুদ্দিন তাঁর মাকে মারধর করেছিলেন, আর সেই রাগ থেকেই তিনি এই কাজ করেছেন।

এই ঘটনার জেরে তৃণমূল ও বিরোধীদের মধ্যে নতুন করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিরোধী দল বিজেপি অভিযোগ তুলেছে যে, তৃণমূল রাজ্যে সমাজবিরোধীদের আশ্রয় দিচ্ছে, যাদের পরে ভোটের কাজে ব্যবহার করা হয়। বিজেপি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক সম্পাদক ইন্দ্রনীল দত্ত সরাসরি দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল এই ধরনের সমাজবিরোধীদের আশ্রয় দেয় ভোট লুটের কাজে।’’ তাঁর মতে, এ ধরনের সহিংস ঘটনাগুলি তৃণমূলের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ঘটছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। তৃণমূল যুব সংগঠনের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভদীপ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘এটি বিজেপির সাজানো গল্প। অভিযুক্ত রঞ্জন তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত নন, বরং তিনি বজরং দলের সদস্য। তৃণমূল কখনওই সমাজবিরোধীদের আশ্রয় দেয় না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অভিযুক্তের কথায় কেউ বিভ্রান্ত না হয়। তৃণমূল এবং সমাজবিরোধীদের মধ্যে কোনও যোগাযোগ নেই।’’

এদিকে, অভিযুক্তের তৃণমূলের নাম করে দাবি এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির তোপের প্রেক্ষিতে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। শামসুদ্দিনের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু আফতাব আলমও অভিযোগ করেন, রঞ্জন আগেও বজরং দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং গত বছর ডিসেম্বরে মারামারির ঘটনায় গ্রেফতারও হয়েছিলেন। অপরদিকে, শামসুদ্দিনের ভাই মহম্মদ আলম দাবি করেন, ‘‘রঞ্জনকে তৃণমূলের আশ্রয়েই রাখা হয়েছে। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’’

এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মতে, রাজনৈতিক দলের নাম করে অভিযুক্তের এ ধরনের দাবির ফলে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে পারে। পুলিশ আপাতত মামলার তদন্ত করছে এবং সকল সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Read more

Local News