রিয়া চক্রবর্তী নির্দোষ!
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর সিবিআইয়ের চূড়ান্ত রিপোর্টে নির্দোষ প্রমাণিত হলেন রিয়া চক্রবর্তী। যাঁর বিরুদ্ধে এক সময়ে তুমুল আক্রোশ দেখা গিয়েছিল, আজ তাঁকে ঘিরেই শোনা যাচ্ছে সমর্থনের সুর। আর সেই সুরেই যোগ দিলেন অভিনেত্রী দিয়া মির্জা।
সুশান্তের মৃত্যুর পর বলিউড অভিনেত্রী রিয়ার ওপর নেমে এসেছিল তীব্র কটাক্ষের ঝড়। বলা হয়েছিল, তিনিই সুশান্তকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছিল মাদক সরবরাহের, এমনকি ‘কালাজাদু’ করারও। অনেকে বলেছিলেন, বাঙালি মেয়েদের ওপরই নাকি রয়েছে এমন ‘অন্ধকার প্রভাব’। ফলাফল? রিয়া এবং তাঁর ভাই শৌভিককে কাটাতে হয়েছিল কয়েক মাস সংশোধনাগারে।
কিন্তু সময় সব সত্য সামনে আনে। সম্প্রতি সিবিআই তাদের চূড়ান্ত রিপোর্টে জানিয়েছে, সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত এবং রিয়ার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই অভিনেত্রী দিয়া মির্জা সোচ্চার হলেন।
‘ডাইনি খোঁজা বন্ধ হয়েছে?’
দিয়া মির্জা টুইটারে লেখেন, “আপনাদের ডাইনি খোঁজা বন্ধ হয়েছে কি না? টিআরপির জন্য যে ভাবে একটা পরিবারকে বিব্রত করা হয়েছে, তার জন্য আপনাদের সকলের রিয়া এবং তাঁর পরিবারের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।” তাঁর কথায় স্পষ্ট, মিডিয়ার লাগাতার কাঠগড়ায় তোলা এবং সমাজের অযাচিত বিচার ব্যথিত করেছে তাঁকে।
নেটদুনিয়ায় রিয়ার জন্য সমর্থন
রিয়ার নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর থেকেই নেটমাধ্যমে তাঁকে সমর্থন জানিয়ে সরব হয়েছেন অনেকে। কেউ বলছেন, “এখন রিয়ার উচিত মানহানির মামলা করা। এই ভিত্তিহীন মামলা তাঁর জীবনে কালিমা লেপেছে।” আবার কেউ কুর্নিশ জানিয়েছেন, তাঁর সহনশীলতাকে।
পাঁচ বছর ধরে চলা তদন্তের অবসান ঘটলেও প্রশ্ন রয়ে যায় — মিডিয়ার প্রচার, জনরোষ এবং বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে। দিয়া মির্জার মতো অনেকে মনে করছেন, শুধুই অভিযোগ প্রমাণিত না হলে দায় সারা যায় না। বরং রিয়ার প্রতি করা অবিচারের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
রিয়ার নতুন পথচলা
রিয়া চক্রবর্তী এখন ধীরে ধীরে নিজের জীবনকে নতুনভাবে গড়ে তুলছেন। ট্রমার ছাপ এখনো মনের গভীরে থাকলেও, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। সুশান্তের স্মৃতির প্রতি সম্মান রেখেই নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন রিয়া।
সময়ই বলবে, সমাজ কি সত্যিই ভুল থেকে শিক্ষা নেবে? নাকি আবারও কোনো ‘রিয়া’কে সমাজের ভ্রুকুটির শিকার হতে হবে? দিয়া মির্জার কণ্ঠে এই প্রশ্নই যেন প্রতিধ্বনিত হলো।