Saturday, May 17, 2025

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে ধৃত দুই চিনা সেনা! প্রকাশ্যে এনে বেজিংকে চাপে ফেলল ইউক্রেন

Share

বেজিংকে চাপে ফেলল ইউক্রেন!

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে নতুন মোড়—এবার সামনে এল দুই চিনা সেনার গ্রেফতার। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাদের ধরে প্রকাশ্যে আনল ইউক্রেন সরকার, যা নিয়ে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক টানাপোড়েন।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি দাবি করেছিলেন, ডনেৎস অঞ্চলের যুদ্ধে কমপক্ষে ১৫৫ জন চিনা সেনা রাশিয়ার হয়ে লড়াই করছে। সেই কথার প্রমাণ হিসেবে এবার দুই ধৃত চিনা সেনার পরিচয় ও ছবি জনসমক্ষে আনল কিভ প্রশাসন।

এই ঘটনার পরপরই সরব হয়েছে বেজিং। চিন সরকারের অভিযোগ, যুদ্ধবন্দিদের নাম ও ছবি প্রকাশ করে ইউক্রেন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। তাদের মতে, এই ধরনের প্রকাশন বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী। তবে ইউক্রেন সাফ জানিয়ে দিয়েছে—এটি শুধু একটি দেশের বিরুদ্ধে নয়, বরং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার বিপর্যয়ের প্রমাণ

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, চিন শুধু কূটনৈতিকভাবে নয়, সরাসরি সামরিকভাবেও রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। এটি যুদ্ধকে দীর্ঘতর করছে এবং ইউরোপের স্থিতিশীলতাকে চ্যালেঞ্জ করছে।”

উল্লেখ্য, এক বছর আগে সিঙ্গাপুরের ‘শাংরি লা ডায়ালগ‘ প্রতিরক্ষা সম্মেলনে জ়েলেনস্কি প্রথমবার চিনের নাম করে অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, “চিনের রাশিয়াকে মদত দেওয়ায় যুদ্ধ থামছে না। বরং তা আরও জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠছে।” যদিও চিন বারবার তাদের নিরপেক্ষ অবস্থান ও ‘শান্তির পক্ষে’ অবস্থান নেওয়ার কথা বলে আসছে।

কিন্তু ইউক্রেনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ বেজিংয়ের সেই দাবিকে একপ্রকার ধাক্কা দিল। রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা মিত্রতার বিষয়টি আরও জোরালোভাবে আন্তর্জাতিক মহলের আলোচনায় উঠে আসতে পারে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

চিনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এর আগেও উঠেছে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে। সেখানে প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের মতোই এবার শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে প্রত্যক্ষ সামরিক সহায়তার অভিযোগ জোরালো হল।

চিন এখনো এই দুই সেনা সদস্যকে তাদের নাগরিক বা সেনা সদস্য বলে স্বীকার করেনি। তবে তাদের প্রকাশ্যে আনা এবং কিভের সরাসরি অভিযোগ বেজিংকে আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা করে তুলতে পারে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক পরিসরে চাপ বাড়বে চিনের উপর—বিশেষ করে জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

একদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ, অন্যদিকে বিশ্ব রাজনীতির এই নতুন উত্তেজনা—সব মিলিয়ে চিন-রাশিয়া মিত্রতার ছায়া এবার স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। এবং এই ছায়া কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা আগামী কূটনৈতিক পদক্ষেপেই নির্ধারিত হবে।

মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ

Read more

Local News