Tuesday, December 2, 2025

রাজ্যে ৭০০ ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা, হাই কোর্টে তিন অভিযুক্তের জামিন খারিজ

Share

হাই কোর্টে তিন অভিযুক্তের জামিন খারিজ

রাজ্যে সাইবার প্রতারণার একটি বিস্তৃত চক্র ধরা পড়েছে, যেখানে ৭০০-এর বেশি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এই প্রতারণার শিকার হয়েছে অন্তত ১৫৩০ জন মানুষ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্রতারণার টাকা দুবাই ও শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশের অভিযোগ, এই ধোঁকাবাজির সঙ্গে এমনকী একটি আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত।

অভিযোগ অনুযায়ী, ফেসবুকে শেয়ার ট্রেডিংয়ের বিজ্ঞাপন দেখে লোভে পড়ে সায়ন চট্টোপাধ্যায় বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি দুটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ ডাউনলোড করেন। পরে বুঝতে পারেন যে অ্যাপগুলো ভুয়ো। কিন্তু তার আগেই তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে মোট এক কোটি ৩৫ হাজার টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যায়। ফেরত চাইলে তাঁকে আরও টাকা জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। অবশেষে তিনি বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ তদন্তে বের করে, প্রতারণার সঙ্গে তিন জন মূল অভিযুক্ত জড়িত। তাদের মধ্যে প্রেমকুমার মহাশেঠ ও জিতেন্দ্রকুমার চৌরাসিয়া অফিস থেকে ভুয়ো কাগজপত্র, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফর্ম, রাবার স্ট্যাম্প, প্যান কার্ড, ডেবিট কার্ড ও ল্যাপটপসহ বহু নথি উদ্ধার করেন। অপর অভিযুক্ত শিলাজিৎ চৌধুরী একটি ব্যাঙ্কের কর্মচারী ছিলেন। অভিযোগ, তিনি ভুয়ো নথি ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতেন এবং ব্যাংকের গোপন তথ্য পাচার করতেন। তিনি বাজার থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছেন।

এই ঘটনার পেছনে আন্তর্জাতিক চক্রের সক্রিয় অংশগ্রহণ পুলিশ ধাপে ধাপে উদঘাটন করছে। অভিযোগ, চাকরির প্রতিশ্রুতি, ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স, নকল সিল ব্যবহার করে মানুষদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এই প্রতারণায় হাজারো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেকের সম্পদই ঝরে গেছে।

কলকাতা হাই কোর্ট মঙ্গলবার এই মামলায় তিন অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ পর্যবেক্ষণ করেন, ‘‘ভুয়ো কোম্পানি, নকল লাইসেন্স ও নথিপত্র ব্যবহার করে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতানো হয়েছে। যদি জামিন দেওয়া হয়, তবে অভিযুক্তেরা সাক্ষীদের ভয় দেখাতে বা প্রমাণ নষ্ট করতে পারে।’’ হাই কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, প্রমাণ অনুযায়ী অভিযুক্তদের ভূমিকা পরিষ্কার এবং তাই তাদের জামিন বাতিল করা হয়েছে।

এই ঘটনা পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেয়, যে কোনও বড় পরিমাণ অর্থের লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা কতটা জরুরি। ভুয়ো নথি ও আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতানো সম্ভব হওয়ায় সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। পুলিশ, হাই কোর্ট এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থার তৎপরতার মধ্যেও প্রতারণার শিকারদের ক্ষতিপূরণ এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া এখন প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ।

ব্যালকনির উপর উড়ালপুল! নাগপুরের সেতু স্মরণ করাচ্ছে ভোপালের ৯০ ডিগ্রি রেলসেতুর ঘটনার কথা

Read more

Local News