Thursday, February 13, 2025

রাজ্যে কত কর্মসংস্থান হবে? বাজেটেই খতিয়ান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

Share

রাজ্যে কত কর্মসংস্থান হবে?

“কর্মসংস্থানই আমার ভিশন”বাজেট ঘোষণার পর সাফ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্প, পরিকাঠামো উন্নয়ন ও প্রযুক্তিখাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এদিন বিভিন্ন প্রকল্পের তথ্য তুলে ধরলেন তিনি।

কোথায় কত চাকরি তৈরি হবে? ক্ষেত্র ধরে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আগামী কয়েক বছরে লক্ষাধিক কর্মসংস্থান তৈরি হবে রাজ্যের বিভিন্ন সেক্টরে। তাঁর কথায়, “আমরা এমন একটা অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই যেখানে গ্রাম ও শহর একসঙ্গে বিকশিত হবে। গ্রামের মানুষ কাজ পাবেন, শহরের অর্থনীতিও পুষ্ট হবে।”

১. ডেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি: ১ লক্ষ কর্মসংস্থান

বীরভূমের মহম্মদবাজারে ডেউচা-পাঁচামি কয়লাখনিতে খননকাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ধীরে ধীরে সেখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পাশাপাশি, তিনি জানান, এই কয়লা আগামী ১০০ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়ক হবে।

২. সিলিকন ভ্যালি টেকনোলজি হাব: ৭৫ হাজার কর্মসংস্থান

রাজারহাটে গড়ে উঠছে সিলিকন ভ্যালির অনুকরণে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক। প্রথমে ঠিক হয়েছিল ১০০ একর জমিতে এই হাব তৈরি হবে, কিন্তু বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়তে থাকায় এখন জমির পরিমাণ দ্বিগুণ, অর্থাৎ ২০০ একর করা হয়েছে। এখানে ৭৫ হাজার নতুন চাকরি তৈরি হবে।

৩. বানতলা চর্মনগরী: ২.৫ লক্ষ কর্মসংস্থান

বানতলার চর্মশিল্পনগরীতে ইতিমধ্যেই ৫ লক্ষ মানুষ কাজ করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নতুন বিনিয়োগের ফলে আরও আড়াই লক্ষ কর্মসংস্থান হবে।

৪. ছয়টি নতুন শিল্প করিডর: কয়েক হাজার নতুন চাকরি

রাজ্যে ছ’টি নতুন রাস্তা তৈরি করা হবে, যার দু’ধারে শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এই ছয়টি করিডরের নাম:
🔹 রঘুনাথপুর-তাজপুর
🔹 ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম
🔹 ডানকুনি-কল্যাণী
🔹 ডানকুনি-কোচবিহার
🔹 খড়্গপুর-মোড়গ্রাম
🔹 পুরুলিয়া-জোকা-কলকাতা

এই ছয়টি শিল্প করিডরের জন্য ৪,৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “রাস্তার কাজ হতে হতে যাবে, চাকরিও তৈরি হতে হতে যাবে।”

“আমাদের ছেলেমেয়েদের বাইরে যেতে দেব না”

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলার যুব সমাজ যাতে নিজের রাজ্যেই কাজ পান, সেই ব্যবস্থা করছে সরকার। তাঁর অভিযোগ, “আমাদের ছেলেমেয়েরা বাইরে গেলে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়, বাংলার যোগ্যতাকে সম্মান দেওয়া হয় না।” তাই রাজ্যের মধ্যেই বিনিয়োগ টেনে কর্মসংস্থান বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে সরকার।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া: “সবই ভুয়ো প্রতিশ্রুতি”

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই বাজেটকে “দিশাহীন” বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “২০২৬ সালের নির্বাচনের পর বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসে প্রত্যেক পরিবারের একজনের চাকরি নিশ্চিত করবে।”

সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম কটাক্ষ করে বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী আজ কর্মসংস্থানের কথা বলছেন, কিন্তু ভোটের সময় বলবেন চপ-মুড়ি বিক্রি করলেই তিনতলা বাড়ি হবে!”

শেষ কথা

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই বাজেট মমতা সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। ফলে নির্বাচনমুখী বাজেটে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি একেবারেই প্রত্যাশিত ছিল। বাস্তবে এই কর্মসংস্থান কতটা হয়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু ভোটের আগে বাংলার যুবসমাজকে নতুন চাকরির স্বপ্ন দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

“রাজ্যের বাজেট দিশাহীন!”— এক সুরে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু, নওশাদ ও বাম-কংগ্রেস

Read more

Local News