Thursday, February 13, 2025

রণাঙ্গনে নারী ব্রিগেডের দুঃসাহসিক অভিযান: ইজরায়েলি প্রমীলা কম্যান্ডোদের প্রথম মিশন

Share

রণাঙ্গনে নারী ব্রিগেডের দুঃসাহসিক অভিযান

ইজরায়েলের সামরিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় সূচিত হয়েছে। সম্প্রতি, দক্ষিণ লেবাননের জঙ্গি ঘাঁটিতে প্রথমবারের মতো প্রমীলা কম্যান্ডো বাহিনী পাঠিয়েছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। দীর্ঘদিন ধরে শুধু পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত এই যুদ্ধক্ষেত্র এবার নারীদের উপস্থিতিতে ভিন্নমাত্রা পেয়েছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে নারীর পদচারণা

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর গোপন আস্তানায় হানা দিয়েছে এই প্রমীলা বাহিনী। তাঁদের মূল কাজ ছিল শত্রুর অবস্থান এবং কার্যকলাপের তথ্য সংগ্রহ করা। আইডিএফের সদর দফতরে সেই তথ্য পাঠানোর পরপরই জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে আক্রমণ চালানো হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন একটি গুরুদায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর এই সাহসী সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবিদার।

নারীদের প্রথম যুদ্ধ অভিযান

ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল ওরি গোর্ডিন এই বিশেষ বাহিনী গঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশনায় ‘কমব্যাট ইনটেলিজেন্স ব্যাটালিয়ন’-এর একটি দল দক্ষিণ লেবাননে প্রবেশ করে। এই দলের সদস্যরা একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানে অংশ নিয়ে হিজবুল্লাহর গুপ্ত আস্তানার সঠিক অবস্থান নির্ণয় করেন। এরপর সেসব স্থানে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী আক্রমণ শানায়।

তরুণী সৈনিকদের অভিজ্ঞতা

এই মিশনে অংশ নেওয়া এক প্রমীলা সৈনিক, ২১ বছর বয়সী তেহিলা, জানিয়েছেন, শত্রু ঘাঁটিতে প্রবেশ করা এবং তাদের চিহ্নিত করার অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং এবং রোমাঞ্চকর অধ্যায়। তাঁর সঙ্গে থাকা কর্পোরাল শেনি বলেছেন, ‘‘আমরা দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত শত্রুপক্ষে প্রবেশ করি এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করি।’’

প্রতিশোধের মিশন

ইরান মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অক্টোবর মাসে চালানো এই অপারেশন ছিল ইজরায়েলের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ। এর আগে, ইরান থেকে ছোড়া ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র ইজরায়েলে আঘাত হানে। এর জবাবে ইজরায়েল তিন দফায় ইরানের বিভিন্ন ঘাঁটিতে হামলা চালায়।

নারীর শক্তি ও সাফল্য

ইজরায়েলের সেনা আইনে প্রতিটি নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের নিয়ম থাকলেও এতদিন প্রমীলা বাহিনীকে রিজার্ভ হিসেবে রাখা হতো। এবার সেই প্রথা ভেঙে তাঁদের রণাঙ্গনে পাঠানোর এই সিদ্ধান্ত এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নারীদের এই সফল অভিযান প্রমাণ করে দিয়েছে যে, যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁরাও সমান দক্ষ।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

দক্ষিণ লেবাননের সফল অভিযানের পর প্রমীলা বাহিনীকে সিরিয়া সীমান্ত ও মাউন্ট ডোভায় মোতায়েন করা হয়েছে। সিরিয়ার রণাঙ্গনে তাঁদের ব্যবহার করা হবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সরকারি কোনো বিবৃতি এখনো আসেনি।

ইজরায়েলের এই পদক্ষেপ শুধু সামরিক ক্ষেত্রে নয়, গোটা বিশ্বের কাছে একটি দৃষ্টান্ত। এই দুঃসাহসিক অভিযান নারীর ক্ষমতায়নের এক অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।

Read more

Local News