Thursday, January 30, 2025

রঙিন জার্সিতে ফিরে ভারতীয় ক্রিকেটের দাপট: ইডেনে ৭ উইকেটের জয়

Share

রঙিন জার্সিতে ফিরে ভারতীয় ক্রিকেটের দাপট

সাদা বলের ক্রিকেটে ভারত আবার প্রমাণ করল কেন তারা এই ফরম্যাটে বিশ্বসেরা। বুধবার ইডেন গার্ডেন্সে ইংল্যান্ডকে মাত্র ৭ উইকেটে হারিয়ে দারুণভাবে নিজেদের সামর্থ্য তুলে ধরল ভারতীয় দল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড তুলল মাত্র ১৩২ রান, যা ভারত ১২.৫ ওভারে তাড়া করে ম্যাচ জিতে নেয়।

শামি ছাড়াই প্রথম একাদশ

ম্যাচের শুরুতেই চমক দেখা গেল ভারতীয় একাদশে। বহু প্রত্যাশিত মহম্মদ শামির পরিবর্তে দলে জায়গা পেলেন ছয়জন বোলিং-ক্ষমতা সম্পন্ন খেলোয়াড়। পেস আক্রমণে নেতৃত্ব দিলেন বাঁ-হাতি আরশদীপ সিং, সঙ্গে ছিলেন অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ড্য ও নীতীশ কুমার রেড্ডি। স্পিন বিভাগে দায়িত্ব ছিল বরুণ চক্রবর্তী, রবি বিশ্নোই ও অক্ষর পটেলের উপর। দলে ভারসাম্য বজায় রাখতেই শামির মতো অভিজ্ঞ পেসারকে বাইরে রাখা হয়।

আরশদীপের দুর্দান্ত শুরু

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপকে শুরুতেই চাপে ফেলে দেন আরশদীপ। প্রথম ওভারেই ফিল সল্টকে শূন্য রানে ফিরিয়ে ভারতীয় শিবিরে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেন। নিজের দ্বিতীয় ওভারে তিনি ফেরান বেন ডাকেটকেও। এই পারফরম্যান্সের মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আরশদীপ নিজের জায়গা আরও পোক্ত করলেন। এত দিন ভারতের হয়ে সর্বাধিক উইকেট ছিল যুজবেন্দ্র চহলের (৯৬ উইকেট)। কিন্তু আরশদীপ মাত্র ৬১ ম্যাচে ৯৭টি উইকেট নিয়ে এই রেকর্ড ভেঙে দিলেন।

ভারতীয় বোলারদের দাপট

ভারতীয় বোলাররা এদিন এক কথায় অসাধারণ ছিলেন। শুরুতে আরশদীপ, মাঝখানে বরুণের স্পিন আর শেষে হার্দিকের পেস— সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের দম ফেলতে দেওয়া হয়নি। আরশদীপ, হার্দিক ও অক্ষর নেন ২টি করে উইকেট, আর বরুণ চক্রবর্তী তুলে নেন ৩টি উইকেট। রবি বিশ্নোই যদিও উইকেট পাননি, তবে মাত্র ২২ রান দিয়ে দুর্দান্তভাবে রান আটকে রাখেন। ধারাবাহিকভাবে উইকেট তুলে ইংল্যান্ডকে চাপে রাখে ভারত।

ইংল্যান্ডের ভরসা শুধু বাটলার

ইংল্যান্ডের পক্ষে একমাত্র লড়াই দেন অধিনায়ক জস বাটলার। ৪৪ বলে ৬৮ রান করে দলকে ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তবে তার পারফরম্যান্স বাদে বাকি ব্যাটারদের দেখে মনে হচ্ছিল তারা অন্য পিচে খেলছেন। দলের আর কোনও ব্যাটার ২০ রানের গণ্ডি পেরোতে পারেননি।

অভিষেকের ঝোড়ো ইনিংস

১৩৩ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতীয় ওপেনার সঞ্জু স্যামসন শুরুতেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলছিলেন। কিন্তু আসল চমক দেখান তরুণ অভিষেক। সঞ্জু আউট হওয়ার পর অভিষেক শুরু করেন বিধ্বংসী ব্যাটিং। পিচের গতি বোঝার পর, ৩৪ বলে ৭৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন পঞ্জাবের এই ব্যাটার। তার ইনিংসে ছিল ৮টি ছক্কা ও ৫টি চার।

মার্ক উডের ১৫৩ কিমি/ঘণ্টা গতির বল ফ্লিক করে ছক্কা হাঁকানোর দৃশ্য ছিল চোখ ধাঁধানো। অভিষেকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কারণে দলের অন্যতম ভরসা সূর্যকুমার যাদব (০ রান) ব্যর্থ হলেও কোনও প্রভাব পড়েনি ম্যাচে। অভিষেক আউট হওয়ার পর তিলক বর্মা (১৯) ও হার্দিক পাণ্ড্য (৩) ম্যাচ শেষ করেন সহজেই।

ভারতের ফর্ম ও আত্মবিশ্বাস

এই ম্যাচে ভারতের বোলিং ও ব্যাটিং— উভয় বিভাগেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখা গেল। সাদা বলের ক্রিকেটে তাদের আধিপত্য কেন এত দৃঢ়, তা এদিন প্রমাণ করল। বোলারদের নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথ ও ব্যাটারদের আক্রমণাত্মক মেজাজ ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকেও নতি স্বীকার করতে বাধ্য করল।

ভারতীয় দল এই জয় দিয়ে শুধু সিরিজে দাপট দেখাল না, বরং বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শক্তি আর গভীরতা আরও একবার তুলে ধরল। ইডেনে অভিষেকের দুর্দান্ত ইনিংস, আরশদীপের বোলিংয়ের ধার, আর পুরো দলের সাফল্য ভবিষ্যতের জন্যও আশার আলো দেখাল।

এবার পাকিস্তান থেকে খুনের হুমকি কপিল শর্মাকে! আতঙ্কের ছায়া বলিউডে

Read more

Local News