যাদবপুরে উত্তেজনা অব্যাহত!
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি এখনও থমথমে। আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবি, উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। অন্যথায় তাঁরা আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটবেন। তবে এই আবহে উপাচার্য জানিয়েছেন, তিনি ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় রাজি আছেন, কিন্তু তাঁদের আচরণ ছাত্রসুলভ হওয়া প্রয়োজন।
উপাচার্যের বক্তব্য: ‘আমি প্রস্তুত, কিন্তু ভাষা হতে হবে শালীন’
মঙ্গলবার রাতে উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত বলেন, “আমি ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে সবসময়ই প্রস্তুত, কিন্তু সেটি হতে হবে শালীন এবং গঠনমূলক উপায়ে।” তিনি জানান, সোমবার মাত্র একটি ইমেল পেয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে দুপুর ২টার মধ্যে ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়। তবে সেই ইমেলের ভাষা ছিল ‘ছাত্রসুলভ নয়’, যা তাঁকে বিস্মিত করেছে। উপাচার্য আরও বলেন, “আমি সবসময় ছাত্রদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু শনিবার যখন আহত ছাত্রদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম, তখন আমার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা নিয়ে কেন কেউ কথা বলছে না?”
ছাত্রদের পাল্টা প্রতিক্রিয়া
উপাচার্যের এই বক্তব্য মানতে নারাজ আন্দোলনরত ছাত্ররা। এসএফআই নেতা শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উনি যদি উপাচার্যের মতো আচরণ করেন, তাহলে আমাদের কাছ থেকেও ছাত্রসুলভ ব্যবহার পাবেন।” আন্দোলনকারী ছাত্রদের দাবি, তাঁরা বারবার ইমেল ও ফোনের মাধ্যমে উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনো উত্তর পাননি। এখন তাঁদের আল্টিমেটাম— বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে উপাচার্য না এলে পরবর্তী আন্দোলনের রূপরেখা নির্ধারণ করা হবে।
লাগাতার আন্দোলন, ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচি অব্যাহত
মঙ্গলবার রাতভর যাদবপুর ক্যাম্পাসের অরবিন্দ ভবনের সামনে ছাত্রদের অবস্থান চলেছে। সকালে আন্দোলনকারীরা ক্লাস বয়কটের ডাক দেয় এবং ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচি পালন করতে থাকে। এই আন্দোলনে ডিএসএফসহ অন্যান্য বামপন্থী ছাত্র সংগঠনও যোগ দিয়েছে। তাদের দাবি, উপাচার্য ক্যাম্পাসে এসে আলোচনায় বসুন এবং আহত ছাত্রদের চিকিৎসার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করুক।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
আন্দোলনকারীদের দাবি, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে ছাত্রদের আহত করার অভিযোগ দায়ের করতে হবে। পাশাপাশি, আন্দোলনকারী ছাত্রদের নামে যে এফআইআর হয়েছে, তা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে দাবি না মানা হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে।
উপাচার্যের শারীরিক অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি
এদিকে, উপাচার্য এখনও অসুস্থ। তাঁর রক্তচাপ ওঠানামা করছে, যার কারণে তিনি বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছেন। তবে তিনি পরিস্থিতির খোঁজ রাখছেন। শনিবার আহত ছাত্রদের দেখতে হাসপাতালে গিয়ে তিনি ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন এবং তাঁর পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।
এখন দেখার বিষয়, উপাচার্য আদৌ বুধবার ক্যাম্পাসে যান কি না এবং ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন কি না। অন্যদিকে, আন্দোলন আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের উপর পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছেন ট্রাম্প! ঘোষণা করলেন নির্দিষ্ট তারিখও