সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের নতুন আর্জি!
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ফের উত্তাল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৬ সালের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই বাতিল করেছে গোটা প্যানেল। তবে এত হাজার চাকরি বাতিলের রায়ে বিপাকে পড়েছে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা। সেই প্রেক্ষিতে এবার ‘নির্দোষ’ প্রার্থীদের চাকরি বাঁচাতে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে। ফলে সেই বছরের গোটা প্যানেল বাতিল করা হয়। এই রায়ে কলকাতা হাই কোর্টের আগের রায়কেও বহাল রাখা হয়। ফলে প্রায় ২৫ হাজার ৭৩৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে যায়। যাঁদের মধ্যে অনেকেই ‘অযোগ্য’ ও ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত। শুধু চাকরি নয়, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শিক্ষা পরিষেবা কার্যত বিপর্যস্ত হতে বসেছে। পর্ষদ জানিয়েছে, রাজ্যের ৯ হাজার ৪৮৭টি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ৬ হাজার ৯৫২টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কট তৈরি হবে। এই বাস্তব অবস্থার কথা তুলে ধরেই পর্ষদ এবার সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছে, যাঁরা ‘দাগি’ নন, অর্থাৎ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন বলে চিহ্নিত, তাঁদের চাকরি অন্তত চলতি শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বজায় রাখা হোক। অথবা, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা যেন কাজে বহাল থাকতে পারেন।
এই আবেদন শোনা হতে পারে বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল। শীর্ষ আদালতের বুধবার প্রকাশিত তালিকায় জানা গেছে, এই মামলা রয়েছে ৩৫ নম্বরে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চই শুনতে পারেন এই গুরুত্বপূর্ণ মামলা।
চাকরি হারানো বহু ব্যক্তি ইতিমধ্যেই পথে নেমেছেন। অনেকেই দাবি করেছেন, তাঁরা ‘যোগ্য’ হয়েও চাকরি হারিয়েছেন। বিক্ষোভ-অবস্থান শুরু হয়েছে রাজধানী দিল্লির যন্তরমন্তরে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার চাকরিহারাদের পাশে থাকবে। রিভিউ পিটিশন দেওয়া হবে শীর্ষ আদালতে। পাশাপাশি, রায়ের ব্যাখ্যাও চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি, স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য চাকরিহারাদের অনুরোধও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সব মিলিয়ে, বৃহস্পতিবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই এখন শিক্ষক সমাজ, ছাত্রছাত্রী ও রাজ্যবাসীর কাছে আগ্রহের কেন্দ্রে। শিক্ষা ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার জন্য এই রায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।
মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ