Sunday, November 30, 2025

মোবাইল নেশা কমাতে চাইছেন? ‘এক ঘরে’ নীতি হতে পারে আপনার উদ্ধার— বলছেন বিশেষজ্ঞরা!

Share

মোবাইল নেশা কমাতে চাইছেন?

চোখ জ্বালা, মাথাব্যথা, ঘাড়ে টান, আঙুলে ব্যথা, রাতে ঘুমের ছন্দপতন— তবু মোবাইল ফোন থেকে নিজেকে দূরে সরাতে পারছেন না? ওটিটি, রিল, গেম— এসবেই সময় উধাও হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বাড়ির খাবার, পারিবারিক আড্ডা, নিজের বিশ্রাম— সবেতেই ভাগ বসাচ্ছে মোবাইল স্ক্রিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজকের দিনে মোবাইল আর যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং ধূমপান বা মদ্যপানের মতোই একটি ভয়ঙ্কর নেশা

অনেকেই বুঝতে পারছেন যে মোবাইলের ব্যবহার তাঁদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক জীবনে ক্ষতির কারণ হচ্ছে। কিন্তু বুঝেও আর তাকে ছেড়ে থাকা যাচ্ছে না। ঠিক এই জায়গাতেই নতুন সমাধান দিলেন তারকা পুষ্টিবিদ এবং লাইফস্টাইল বিশেষজ্ঞ ঋজুতা দিবারেকর


■ মোবাইল আসক্তি— নেশার মতোই দেখুন, তবেই কমবে

ঋজুতার মতে, মোবাইলকে নেশার জিনিস হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেছেন—

“মোবাইল যখন নেশা, তখন তাকে ধূমপান বা মদের মতো করেই দেখা উচিত।”

ছোটবেলা থেকেই তিনি অভ্যস্ত মানুষকে সঠিক যাপনের পথ দেখাতে। বলিউডের করিনা কাপুর খান, আলিয়া ভাট, জাহ্নবী কাপুর— সকলেই তাঁর পরামর্শে জীবনযাপন বদলেছেন। এবার মোবাইল আসক্তি কমাতে দিলেন এমন একটি কৌশল, যা বাস্তবে প্রয়োগ করলে পরিবর্তন চোখে পড়বে।


■ ‘এক ঘরে’ নীতি— মোবাইলের জন্য আলাদা জোন তৈরি করুন

ঋজুতা একটি মজার উদাহরণ দেন— বিমানবন্দরের স্মোকিং জোন।

বিশাল বিমানবন্দরে ধূমপায়ীদের জন্য থাকে একটি ছোট্ট কাচঘর; দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই, সেখানে কোনও আরাম নেই। এই প্রক্রিয়াই ধূমপানকে অস্বস্তিকর করে তোলে।

তিনি বলেন—

“মোবাইলের ক্ষেত্রেও তেমন নিয়ম প্রয়োজন। ঘরের মধ্যে একটি ‘মোবাইল ঘর’ তৈরি করতে হবে।”

সেই ঘরের বৈশিষ্ট্য হবে:

  • বসার মতো আরামদায়ক চেয়ার থাকবে না
  • কোনও পাখা বা এসি থাকবে না
  • সেই ঘর হবে একেবারে সাধারণ
  • যে কোনও ফোন রিসিভ করতে হলে উঠেই সেখানে যেতে হবে
  • মোবাইল দেখুন বা কাজ করুন— সবটাই ওই এক ঘরেই করতে হবে
  • কাজ শেষে ফোনটি সেখানেই রেখে বেরিয়ে আসতে হবে

এভাবে মোবাইল ব্যবহারের সঙ্গে আরামের সম্পর্ক ভেঙে যাবে। আরাম না থাকলে নেশাও বাড়বে না— এই তত্ত্বই দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ।


■ কেন এতে কাজ হবে?

মোবাইল আসক্তি মূলত ডোপামিন নির্ভর। আরাম করে শুয়ে বা বসে ফোন স্ক্রল করলে ডোপামিন বেশি ক্ষরিত হয়। কিন্তু ফোন ব্যবহারে যদি অসুবিধা বাড়ানো হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্ক সেই কাজটিকে কম আকর্ষণীয় মনে করবে।

মোবাইল দেখতে হবে দাঁড়িয়ে, আরামহীন জায়গায়— এতে ফোন স্ক্রল করার প্রবণতা কমবে।
ধীরে ধীরে স্ক্রিন টাইম উল্লেখযোগ্যভাবে নেমে আসবে।


■ বিশেষজ্ঞদের মত— কঠোর শৃঙ্খলাই একমাত্র পথ

ঋজুতার কথা, আসক্তি কখনও আরামে বাড়ে, কষ্টে নয়। তাই মোবাইল ব্যবহারের নিয়ম যত কঠোর হবে, নেশা ততটাই কমবে।
কারও বক্তব্য—

“নেশা দমনে কড়া হাতে ব্যবস্থা না নিলে কোনও পরিবর্তন সম্ভব নয়।”


শেষ কথা

মোবাইল আসক্তি আজকাল শুধু কিশোরদের নয়, প্রাপ্তবয়স্কদেরও বড় সমস্যা। তাই বাড়িতে একটি “মোবাইল রুম” তৈরি করে নেশাকে নির্দিষ্ট জায়গায় বন্দি রাখা— এই পদ্ধতি কার্যকরী হতে পারে।

আপনি কি চেষ্টা করবেন এই একঘরে নীতি?
আজই শুরু করলে কয়েক দিনের মধ্যেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন!

Read more

Local News