মেয়ের ‘অন্যায়ের শিকার’ হওয়ার দাবিতে অনড় মা!
পানাগড় দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পুলিশ বলছে এক কথা, আর পরিবার বলছে আরেক। নিহত তরুণী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন— এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং ইভটিজিংয়ের (নারীকে হেনস্তার) শিকার হয়েই প্রাণ হারিয়েছে তাঁর মেয়ে।
যদিও পুলিশের দাবি, গাড়ি ধাওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি এবং সুতন্দ্রার গাড়িটিই বিপরীত দিক থেকে আসা সাদা গাড়িটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে উল্টে যায়। কিন্তু তনুশ্রী বিশ্বাস করতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা জানি, এটা ইভটিজিংয়ের ঘটনা।’’
ড্রাইভার ‘রেষারেষি করে না’, দাবি সুতন্দ্রার মায়ের
সুতন্দ্রার মা সরাসরি পুলিশের দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘যে ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছিল, সে রেষারেষি করার মতো মানুষ নয়। ওর সঙ্গে আমি বহুবার বহু জায়গায় গিয়েছি। সে কখনও এমন কাজ করেনি।’’
তনুশ্রী আরও জানান, সুতন্দ্রা এই চালকের সঙ্গে একাধিকবার গয়া গেছেন এবং নিরাপদে ফিরেও এসেছেন। তাঁর মতে, ‘‘যারা হাইওয়েতে নিয়মিত গাড়ি চালায়, তারা রেষারেষি করে না।’’
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি, যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
কি ঘটেছিল সেদিন রাতে?
রবিবার রাতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজে চন্দননগর থেকে গয়া যাচ্ছিলেন ২৬ বছরের সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগ, পানাগড়ে কয়েকজন মত্ত যুবক তাঁর গাড়ির পিছু ধাওয়া করে এবং একাধিকবার ধাক্কা দেয়।
🚗 সুতন্দ্রার গাড়ি দ্রুত গতিতে পালানোর চেষ্টা করলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।
🚗 ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার, গুরুতর আহত হন তাঁর দুই সহযাত্রী।
🚗 তরুণীর গাড়ি এবং ধাওয়ার অভিযোগ থাকা সাদা গাড়ি দুটিই আটক করেছে পুলিশ।
তবে পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধরি সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে দাবি করেছেন, এটি ইভটিজিংয়ের ঘটনা নয়। বরং সুতন্দ্রার গাড়িই অন্য গাড়িটিকে ওভারটেকের চেষ্টা করছিল।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী—
📌 জাতীয় সড়কের পাশের একটি গলিতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল সাদা গাড়িটি।
📌 সুতন্দ্রার গাড়িও সেই একই পথে ঢোকার চেষ্টা করে, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।
📌 এই দুর্ঘটনায় ইভটিজিংয়ের কোনও যোগ নেই।
পরিবারের দাবি: ‘‘পুলিশ ধামাচাপা দিতে চাইছে’’
তবে পুলিশের বক্তব্য মানতে নারাজ সুতন্দ্রার পরিবার ও স্থানীয়রা। তাঁরা একবাক্যে বলছেন, ‘‘এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হেনস্তার শিকার হয়েছে সুতন্দ্রা।’’
👩👩👦 মায়ের প্রশ্ন: ‘‘কেন এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি?’’
🚨 স্থানীয়দের ক্ষোভ: ‘‘কেন পুলিশ এত দ্রুত ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে?’’
💬 বিজেপির অভিযোগ: ‘‘রাজ্য প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইছে।’’
সোমবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত রাজ্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে, যাতে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা যায়।’’
এদিকে, তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে চন্দননগরে বিজেপির পক্ষ থেকে রাস্তা অবরোধ করা হয়।
এগিয়ে আসছেন রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো
📌 সোমবার সুতন্দ্রার মায়ের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য সুজাতা পাকড়াশি লাহিড়ী।
📌 চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তীও পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
📌 বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালও দেখা করতে আসতে পারেন বলে জানা গেছে।
এখন দেখার বিষয়, পুলিশ কি সত্যিই যথাযথ তদন্ত করবে, নাকি এই ঘটনা আরও একটি ‘ফাইল ক্লোজড’ হিসেবেই থেকে যাবে?
শুরুতেই ছন্দহীন শামি, এক ওভারে ১১ বল! বুমরাহের রেকর্ড ভাঙলেন বাংলার পেসার