মেঝে যদি হয় শিল্পকর্ম!
নতুন বাড়ি মানেই নতুন স্বপ্ন। দেওয়ালের রং থেকে শুরু করে ছাদ, আসবাব — সবেতেই খুঁতখুঁতে মনোযোগ থাকে। কিন্তু আপনি কি জানেন, ঘরের মেঝেও হতে পারে চমকে দেওয়ার মতো নজরকাড়া? দিনের পর দিন তার উপরই তো দাঁড়িয়ে থাকে সংসার। তাই মেঝে শুধু মজবুত হলেই চলবে না, দেখতে-শুনতেও সুন্দর হতে হবে। আবার শিশু বা বয়স্কদের হাঁটাচলা, খেলাধুলার নিরাপত্তাও মাথায় রাখতে হয়। আজ রইল ৫ ধরনের মেঝের দুর্দান্ত বিকল্প, যেগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব।
১. টেরাকোটা টাইলস: মাটির ছোঁয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
টেরাকোটা টাইলস মূলত পোড়ামাটির তৈরি। উচ্চ তাপমাত্রায় তৈরি হওয়ায় এটি খুবই টেকসই এবং সহজে ফাটে না। ঘরের ভেতরে ও বাইরে— দুই জায়গাতেই ব্যবহার করা যায়। রং ফিকে হয় না, কিন্তু মাঝে মাঝে সিলিং করিয়ে নেওয়া দরকার। এটি মাটির ঘরোয়া উষ্ণতা এনে দেয় এবং পায়ে চলাচলেও আরামদায়ক।
২. জয়সলমের স্টোন: রাজকীয় উজ্জ্বলতায় ঘরের মেঝে
রাজস্থানের এই সোনালি-হলুদ চুনাপাথর প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল। পরিবেশবান্ধব এবং দেখতে রাজকীয় হলেও এতে হালকা ছিদ্র থাকে, যার ফলে দাগ পড়ার সম্ভাবনা থাকে। নিয়মিত পরিষ্কার রাখলে এবং রক্ষণাবেক্ষণ করলে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ঘরের রোশনিতে আলাদা এক সৌন্দর্য যোগ করে।
৩. কাডাপ্পা স্টোন: নিরাপদ ও দৃঢ় পছন্দ
দক্ষিণ ভারতের এই কালো চুনাপাথর রুক্ষ প্রকৃতির, ফলে পিচ্ছিল নয়। বাচ্চা বা বৃদ্ধ— সবার চলাফেরার জন্য নিরাপদ। বাড়ির ভিতরে এবং ছাদ, বারান্দা কিংবা সুইমিং পুলের পাশে লাগানোর জন্য দারুণ। জল শুষে নেওয়ার ক্ষমতা থাকায় ভিজে অবস্থাতেও নিরাপদ থাকে।
৪. মার্বেল: চিরন্তন সৌন্দর্য ও চকচকে ঝলক
মার্বেল মানেই জৌলুশ। এটি প্রাকৃতিক পাথর, তাই প্রতিটি টুকরোর রং ও টেক্সচার আলাদা। রান্নাঘর থেকে বসার ঘর— যেকোনো জায়গায় মানিয়ে যায়। তবে এটি একটু ভঙ্গুর এবং অ্যাসিডিক কিছু পড়লে দাগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবুও তার সৌন্দর্য ও জ্যোতির কারণে বহু মানুষের প্রথম পছন্দ।
৫. টেরাজ়ো: পুরনো সৌন্দর্যে আধুনিক ছোঁয়া
মার্বেল, গ্রানাইট, কোয়ার্টজ ও কাচ মিশিয়ে তৈরি হয় টেরাজ়ো, যা রং ও ডিজাইনে দারুণ বৈচিত্র্যপূর্ণ। টেকসই, জল রোধী এবং পরিবেশবান্ধব এই মেঝে আজও অনেক পুরনো অট্টালিকায় দেখা যায়। রক্ষণাবেক্ষণ কম হলেও চেহারায় আছে আভিজাত্যের ছোঁয়া।
শেষকথা:
মেঝে বাছাই শুধুমাত্র ডিজাইনের প্রশ্ন নয়, এটি একান্তই আপনার জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার সঙ্গেও জড়িত। তাই আপনার ঘরের ধরন, প্রয়োজন, এবং রুচি অনুযায়ী বেছে নিন একেবারে নিখুঁত মেঝে। আর মনে রাখবেন— সুন্দর একটা মেঝে মানেই, প্রতিটি পা ফেলার মুহূর্তও হয়ে উঠতে পারে অপূর্ব অভিজ্ঞতা।