মেঘালয় হয়ে ভারতে প্রবেশ!
বলিউড তারকা সইফ আলি খানের উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম ওরফে বিজয় দাসকে নিয়ে মুম্বই পুলিশের তদন্ত এগোচ্ছে নতুন দিক নির্দেশনায়। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে তিনি কীভাবে সইফের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছালেন, সেই জট খুলতে তদন্তকারীরা একাধিক তথ্য সংগ্রহ করেছেন। পুলিশের দাবি অনুযায়ী, শরিফুল মেঘালয়ের ডাউকি নদী পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছিলেন এবং পশ্চিমবঙ্গে কয়েক সপ্তাহ কাটিয়ে পরে মুম্বই চলে যান।
মেঘালয় থেকে বাংলায় এবং তারপর মুম্বইয়ে যাত্রা
পুলিশের তথ্য অনুসারে, প্রায় সাত মাস আগে শরিফুল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অতিক্রম করেন। মেঘালয়ের ডাউকি নদী পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করার পর তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। সেখানে তিনি বেশ কিছুদিন কাজের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন। এ সময় তিনি ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরির চেষ্টাও করেছিলেন। পুলিশের দাবি, শরিফুল পশ্চিমবঙ্গে থাকার সময় আধার কার্ড বানানোর চেষ্টা করেছিলেন, যদিও তিনি তাতে ব্যর্থ হন। তবে, ওই সময়েই তিনি একটি ভারতীয় সিম কার্ড সংগ্রহ করতে সক্ষম হন।
ভারতীয় সিম কার্ড সংগ্রহ এবং মুম্বই যাত্রা
পুলিশ জানিয়েছে, শরিফুল পশ্চিমবঙ্গের এক মহিলার নামে সিম কার্ড সংগ্রহ করেছিলেন। সিমটি ব্যবহার করে তিনি বাংলাদেশের একাধিক নম্বরে যোগাযোগ করেছেন। এমনকি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তিনি বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপের সাহায্য নিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শরিফুল পরে মুম্বই চলে যান। সেখানে তিনি এমন কাজের সন্ধান করেন যেখানে নাগরিকত্ব প্রমাণের নথির প্রয়োজন ছিল না।
মুম্বইয়ে অবস্থান এবং কাজের সন্ধান
মুম্বইয়ে গিয়ে শরিফুল বিভিন্ন জায়গায় কাজের খোঁজ করেন। তাঁকে সাহায্য করেন অমিত পাণ্ডে নামের এক ঠিকাদার। পুলিশের দাবি, শরিফুল মুম্বইয়ে গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে বসবাস করছিলেন এবং সেখানে তিনি একাধিক জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। এই সময় তিনি সাইফ আলি খানের বাড়ি এবং বান্দ্রার আরও এক বলিউড তারকার বাংলোর আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যান। পুলিশ অনুমান করছে, তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল চুরি করা। যদিও সাইফের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টার সময় তিনি ধরা পড়েন।
বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রমাণিত
শরিফুলের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রথম থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন মুম্বই পুলিশ। তবে অভিযুক্তের আইনজীবী দাবি করেছিলেন, শরিফুল ভারতীয় নাগরিক এবং তাঁর বাংলাদেশি হওয়ার কোনও প্রমাণ নেই। কিন্তু তদন্তের পর মুম্বই পুলিশের দাবি, শরিফুল আসলে বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা শরিফুলের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। পুলিশের দেওয়া তথ্যে জানা গিয়েছে, শরিফুল বাংলাদেশের একটি স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাঁর দুই ভাই বাংলাদেশে রয়েছেন। কাজের সন্ধানে শরিফুল ভারতে এসেছিলেন।
সাইফের বাড়িতে হামলার উদ্দেশ্য
মুম্বই পুলিশের মতে, শরিফুল সাইফের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, তবে সঠিক সময়ে ধরা পড়ে যান। এর আগেও তাঁকে বান্দ্রায় অন্য এক তারকার বাংলোর সামনে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। যদিও ওই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ ধারণা করছে, চুরির উদ্দেশ্যে তিনি এসব জায়গায় গিয়েছিলেন।
উপসংহার
সাইফ আলি খানের উপর হামলার ঘটনাটি শুধু বলিউডে নয়, সারাদেশে আলোড়ন তুলেছে। শরিফুল কীভাবে মেঘালয় হয়ে ভারতে ঢুকে পশ্চিমবঙ্গের পরিচয়পত্র সংগ্রহের চেষ্টা করলেন এবং পরে মুম্বইয়ে গিয়ে সাইফের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছালেন, তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনায় সীমান্ত নিরাপত্তার দুর্বলতা, অবৈধ অভিবাসন, এবং অপরাধ দমনে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। মুম্বই পুলিশের তদন্ত আরও গভীরতর হলে এ বিষয়ে নতুন তথ্য উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঠাণের সেই হাসপাতালেই জন্মদিন পালন কাম্বলির, সঙ্গী চিকিৎসক, নার্সেরা