Saturday, April 19, 2025

মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ

Share

মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া!

প্রায় এক সপ্তাহের অস্থিরতার পরে মুর্শিদাবাদে অবশেষে ফিরছে শান্তি ও স্বাভাবিকতা। জঙ্গিপুর মহকুমার অন্তর্গত সুতি, ধুলিয়ান ও শমসেরগঞ্জের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় রবিবার রাত পর্যন্ত আর কোনও নতুন অশান্তির খবর মেলেনি। প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপে, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের যৌথ নজরদারিতে অবশেষে জেলার বাসিন্দারা কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সঙ্গে আছে রাজ্য পুলিশের কঠোর টহল। প্রতিটি গ্রামে চলছে রুটমার্চ। কোথাও যাতে নতুন করে উত্তেজনা না ছড়ায়, সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।

ঘরে ফেরার ডাক

অশান্তির আবহে যাঁরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের ফেরত আনতে এবার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। সোমবার রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে এই বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক হতে পারে। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই পদক্ষেপ।

পরিস্থিতি এখন কেমন?

রবিবার রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার দিনভর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি জানান, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলেছি এবং গুজবে কান না দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।” কারও কোনও সমস্যা হলে দ্রুত পুলিশকে জানানোর কথাও বলেছেন তিনি।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার চুলচেরা নজরদারি

  • জেলায় মোতায়েন রয়েছে ১৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী
  • সীমান্তে টহলে রয়েছে বিএসএফ
  • তিনটি অতি স্পর্শকাতর থানা চিহ্নিত: শমসেরগঞ্জ, সুতি ও ধুলিয়ান
  • প্রতিটি এলাকায় চলছে বিশেষ মনিটরিং টিমের নজরদারি
  • জেলা গোয়েন্দা বিভাগ খতিয়ে দেখছে কোনও উস্কানি চলছে কিনা

শান্তি ফেরাতে একসঙ্গে সকলে

ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে শান্তি বৈঠক হয়েছে বিভিন্ন থানায়। পঞ্চায়েত স্তরে গঠিত হয়েছে বুথভিত্তিক শান্তি কমিটি। জেলার প্রশাসনিক প্রধান রাজর্ষি মৈত্র পরিদর্শন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলো। পাশাপাশি, তৈরি হয়েছে একটি কমিটি যা ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

কোথা থেকে শুরু অশান্তির?

গত মঙ্গলবার, জঙ্গিপুরে সংশোধনী ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ ঘিরে শুরু হয় উত্তেজনা। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে সুতি, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জ ও ফরাক্কার কিছু অংশে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, শুক্রবার পুলিশের পক্ষ থেকে গুলি চালানো হয়, যাতে দুই ব্যক্তি আহত হন। যদিও বেসরকারি সূত্রে তিন জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে, প্রশাসনের তরফে মৃত্যুর কথা অস্বীকার করা হয়েছে।

শেষ কথা

অশান্তির আঁধার কাটিয়ে আবারও নতুন করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পথ ধরছে মুর্শিদাবাদ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘরছাড়া মানুষদের ফেরাতে ও শান্তি টিকিয়ে রাখতে যা যা প্রয়োজন, সেই সব উদ্যোগ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন জেলার মানুষ চাইছেন, হিংসা ও বিভাজনের রেষ কাটিয়ে তারা যেন ফিরে পেতে পারেন তাদের চেনা ছন্দে জীবন।

অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ, আর ইউসুফ পঠান ‘ফুরফুরে চা’-এ মশগুল! ক্ষোভে ফুঁসছে জনতা

Read more

Local News