Thursday, February 13, 2025

মুম্বইয়ে বাস দুর্ঘটনা: সাতজনের মৃত্যু, আহত অন্তত ৪৯

Share

মুম্বইয়ে বাস দুর্ঘটনা

সোমবার রাতে মুম্বইয়ের কুরলা এলাকায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন। একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একের পর এক গাড়িতে ধাক্কা মেরে ফুটপাথে উঠে যায় এবং শেষে একটি আবাসনের মূল ফটকে ধাক্কা খেয়ে থেমে যায়। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪৯ জন।

দুর্ঘটনার বিবরণ

রাত প্রায় ১০টা নাগাদ, বৃহন্মুম্বই ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট (বেস্ট)-এর একটি বাস কুরলা স্টেশন থেকে আন্ধেরির দিকে যাত্রা করছিল। হঠাৎ বাসটির গতি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। যাত্রীরা বাসচালককে গতি কমানোর জন্য বারবার সতর্ক করেন, কিন্তু কোনো ফল হয়নি। দ্রুতগতির বাসটি ৩০-৪০টি গাড়িকে ধাক্কা মেরে ফুটপাথে উঠে যায় এবং শেষে একটি আবাসনের গেটে ধাক্কা খেয়ে থেমে যায়।

হতাহতের সংখ্যা ও সরকারি প্রতিক্রিয়া

দুর্ঘটনার ফলে সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রথমে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরে পুলিশের তরফে নিশ্চিত করা হয় যে মৃতের সংখ্যা ছয়, যা পরে আরও বাড়ে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসটি হঠাৎ করে দ্রুত গতিতে চলতে শুরু করে। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করতে থাকেন। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একের পর এক গাড়িকে ধাক্কা দিতে থাকে। এমনকি ফুটপাথে থাকা পথচারীদেরও রেহাই দেয়নি এই বাস। দুর্ঘটনার চিত্র অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ছিল বলে জানান স্থানীয়রা।

পুলিশ ও তদন্তের অগ্রগতি

দুর্ঘটনার পরে বাসচালক সঞ্জয় মোরেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছে। বাসচালক মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করেছে। বাসটির যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে প্রশ্ন

এই ঘটনায় বাসের যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি চালকের গাফিলতি দায়ী, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। চালকের মাদক বা অ্যালকোহল সেবন করেছিল কি না, তা নিয়েও পুলিশ নিশ্চিত হতে চায়।

সামগ্রিক চিত্র

মুম্বইয়ের মতো একটি জনবহুল শহরে এমন দুর্ঘটনা ভয়াবহ এবং বেদনাদায়ক। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থায় এমন সমস্যার নজির নতুন নয়। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তারা।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আমাদের সবার জন্যই একটি বড় শিক্ষা। সতর্কতা এবং সচেতনতা ছাড়া এমন দুর্ঘটনা ঠেকানো অসম্ভব। প্রশাসনের পাশাপাশি নাগরিকদেরও এ বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।

Read more

Local News