মিলিন্দ সোমন-এর পুণ্যস্নান
মহাকুম্ভ মেলার মতো বিশাল আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হন পুণ্যস্নান করতে। বিশেষত এই সময়, ত্রিবেণী সঙ্গমের পুণ্যতটে এসে নানা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করার মাধ্যমে দুঃখ, দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে চান অনেকে। এবারের মহাকুম্ভে, অভিনেতা মিলিন্দ সোমন তাঁর স্ত্রী অঙ্কিতা কোনওয়ারের সঙ্গে উপস্থিত হয়ে এক পুণ্যস্নান করেন। তবে, এই পুণ্যস্নান শেষে একদিকে তার মন ভরে গেলেও, অন্যদিকে মর্মাহত হয়ে ফিরে আসতে হয় তাকে।
প্রসঙ্গত, মিলিন্দ সোমন তার সামাজিক মাধ্যমে কিছু ছবি শেয়ার করে জানিয়েছেন, “মৌনী অমাবস্যার মতো পবিত্র দিনে অঙ্কিতার সঙ্গে মহাকুম্ভে আসতে পেরে ভাগ্যবান মনে করছি নিজেকে। এই আধ্যাত্মিক জায়গায় এসে মনে হচ্ছে, এই অসীমের সামনে আমার অস্তিত্ব অতি ক্ষুদ্র। এই পৃথিবীতে আমরা যেটুকু সময় রয়েছি, সবটাই মূল্যবান।”
তবে পুণ্যস্নানের পরেও মিলিন্দের মনটা যেন ঠিকমতো সাচ্ছন্দ্য অনুভব করেনি। নিজের অনুভূতি শেয়ার করে তিনি আরও বলেছেন, “মনে ভালো লাগলেও, গত রাতের ঘটনায় আমি মর্মাহত। যাঁরা প্রিয়জনদের হারালেন, তাঁদের জন্য আমার সমবেদনা রইল।” তাঁর এই বক্তব্যের পেছনে ত্রিবেণী সঙ্গমে ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনা।
ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নান করতে আসা মানুষের ভিড় ছিল অতিরিক্ত। তিনটি পবিত্র নদী— গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতীর মিলনে তৈরি হওয়া এই স্থান পুণ্যার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, এই স্নানের জন্য ভিড় এতটাই ছিল যে, কিছু অসাবধানতার কারণে পদপিষ্ট হয়ে অনেক পুণ্যার্থী আহত হয়েছেন, এমনকি অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এই ঘটনা মিলিন্দের মনের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং তার অনুভূতি ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে।
মিলিন্দের বয়স ৫৯, তবে তার চেহারা আর মনোবল যেন তার বয়সের কোনো লক্ষণই বহন করেনা। গা dark ় রঙের চুল ও দাড়ির মধ্যে সিলভার ঝিলিক দেখা গেলেও, তার শরীর এখনও শক্তিশালী এবং সুস্থ। বয়স কেবল একটি সংখ্যা— এই প্রবাদ মিলিন্দের ক্ষেত্রে একেবারে প্রমাণিত। একদিকে, তার পুণ্যস্নান এবং আধ্যাত্মিক জায়গায় আসা তাকে এক অন্যরকম অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত করেছে, তবে অন্যদিকে, সেই অনুভূতি মিশে গিয়েছে এক গভীর বেদনায়।
এদিন পুণ্যস্নানের জন্য মিলিন্দ বেছে নিয়েছিলেন হলুদ রঙের ধুতি এবং উর্ধ্বাঙ্গে ছিল শুধুমাত্র রুদ্রাক্ষের মালা। হাতে ফুল নিয়ে তিনি স্নান করেন এবং আশিস প্রার্থনা করেন। সঙ্গী হিসেবে তার পাশে ছিলেন অঙ্কিতা, যিনি তার থেকে প্রায় ২৬ বছরের ছোট। তিনি খয়েরি রঙের কুর্তি পরিহিত ছিলেন এবং দুজনেই একসঙ্গে ওই পবিত্র মুহূর্তটি উপভোগ করেন।
মিলিন্দের সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা একটি ছবির ক্যাপশনে তিনি আরও জানান, “হর হর গঙ্গে, হর হর মহাদেব!” এই প্রার্থনাটি যেন তাঁর মনকে কিছুটা শান্তি দিয়েছে। তবে, সমস্ত খুশির পরেও সেই বিষাদময় ঘটনা তার মন থেকে সরে যায়নি, যা ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নানের মধ্যেও তার সঙ্গে ছিল।
মিলিন্দের এই বক্তব্য এবং তার সহানুভূতির পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা আবারও বুঝতে পারি যে, পুণ্যস্নানের সঙ্গে আসা আধ্যাত্মিক শান্তির পাশাপাশি, যখন এমন এক বিপদজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তখন মানবিক অনুভূতি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
শ্রীদেবী-কন্যা খুশি কপূরের বদলে যাওয়া মুখ, নাক, ঠোঁটের গড়ন: অস্ত্রোপচারের গল্প নিজেই শেয়ার করলেন!