মিক্সারে স্মুদি বা বেটে চাটনি!
আমরা প্রায়ই শুনে থাকি— ফলের রস না করে গোটা ফল খাওয়াই ভালো, কারণ রস করলে নাকি পুষ্টিগুণ কমে যায়। কিন্তু শুধু ফল নয়, আজকাল ধনেপাতা, বাদামের চাটনি থেকে শুরু করে নানা ধরনের স্মুদি— সবই তৈরি হয় মিক্সারে বা শিলে বেটে। প্রশ্ন হচ্ছে, এতে কি সত্যিই খাবারের পুষ্টি কমে যায়? নাকি শুধু তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেড়ে যায়?
পুণের পুষ্টিবিদ অমিতা গাদরে এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, উত্তরটি একেবারে সরল নয়। সব খাবারের ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য হয় না। সাধারণভাবে বলতে গেলে, প্রোটিন, খনিজ ও অধিকাংশ ভিটামিন মিক্সারে ঘুরিয়ে বা বেটে নিলে খুব একটা পরিবর্তন হয় না। প্রোটিন শেক, মিল্ক শেক কিংবা স্মুদি— এইসব খাবার মিক্সারে তৈরি করলেও মূল পুষ্টিগুণ অনেকাংশে অক্ষুণ্ণ থাকে।
তিনি আরও বলেন, অনেকেরই গোটা ফল বা বীজ হজমে সমস্যা হয়। কিন্তু মিক্সারে সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে তা সহজে হজম হয় এবং খেতেও সুবিধা হয়। যেমন, যাদের বাদাম বা বীজে অ্যালার্জি বা হজমজনিত সমস্যা আছে, তারা যখন বাদাম বাটার বা গুঁড়ো আকারে খান, তখন অসুবিধা হয় না।
ফলের রসের ক্ষেত্রে ভিন্ন নিয়ম
তবে ফলের রসের প্রসঙ্গে পরিস্থিতি আলাদা। গোটা ফল খেলে আমরা ফাইবারসহ সব পুষ্টি পাই, কিন্তু রস করার সময় অনেকটা ফাইবার বাদ পড়ে যায়। এর ফলে ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্সের মতো কিছু পুষ্টিগুণও কমে যেতে পারে। এই কারণেই পুষ্টিবিদরা সবসময়ই গোটা ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিবর্তন
বেটে বা মিক্সারে খাবার তৈরি করলে তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) হলো এমন একটি সূচক, যা দিয়ে মাপা হয় খাবার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা কত দ্রুত বৃদ্ধি পায়। GI যত কম, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তত ভালো।
পুষ্টিবিদের মতে, মিক্সারে বা বেটে খাবার প্রস্তুতের সময় এর মধ্যকার কার্বোহাইড্রেট ভেঙে সহজে শর্করায় পরিণত হতে পারে। ফলে GI সামান্য বেড়ে যায়। তবে খাবারের সঙ্গে যদি পর্যাপ্ত প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে, তাহলে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় থাকে এবং GI বৃদ্ধির প্রভাব খুব বেশি ক্ষতিকর হয় না।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ
- খাবারের পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে খাওয়ার ঠিক আগে মিক্সারে ঘুরিয়ে বা বেটে নেওয়া ভালো।
- দীর্ঘ সময় ধরে মিক্সার চালালে তাপ উৎপন্ন হয়, যা কিছু ভিটামিন ও এনজাইম নষ্ট করতে পারে।
- সবুজ পানীয় বা চাটনি খোলা জায়গায় বেশি সময় রাখলে রং বদলে যায়। এর কারণ জারণ প্রক্রিয়া। এতে পুষ্টি ও স্বাদ দুটোই প্রভাবিত হতে পারে।
- এই সমস্যা কমাতে এক ফোঁটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে, যা জারণের গতি কমায় এবং রংও ঠিক রাখে।
সব মিলিয়ে, মিক্সারে স্মুদি বা শিলে বাটা চাটনিতে পুষ্টিগুণের বড় কোনো ক্ষতি হয় না, তবে খাবারের ধরন ও প্রস্তুতির পদ্ধতি অনুযায়ী কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে। সঠিক সময়ে, সঠিক উপায়ে প্রস্তুত করলে পুষ্টি অটুট রেখে সুস্বাদু খাবার উপভোগ করা যায়।
আপনি চাইলে আমি এর সঙ্গে এখনই SEO উপযোগী শিরোনাম, মেটা বর্ণনা ও FAQ সেকশন তৈরি করে দিতে পারি, যাতে এটি সরাসরি ওয়েবসাইটে প্রকাশযোগ্য হয়।
শুল্কযুদ্ধের মাঝেই আমেরিকা সফরে মোদী? ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে

