Monday, February 24, 2025

“মা আত্মহত্যা করেনি, বাবাই খুন করেছে!”—চার বছরের শিশুর হৃদয়বিদারক সাক্ষ্য

Share

চার বছরের শিশুর হৃদয়বিদারক সাক্ষ্য!

মধ্যপ্রদেশের ঝাঁসিতে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ২৭ বছর বয়সি এক তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে প্রথমে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু সত্যিটা প্রকাশ্যে এনেছে তাঁর মাত্র চার বছরের শিশুকন্যা। মায়ের ওপর বাবার অত্যাচারের বর্ণনা দিতে সে আশ্রয় নিয়েছে নিজের আঁকা ছবির। তার ছোট্ট হাতে আঁকা চিত্রেই উঠে এসেছে নির্মম সত্য—”বাবাই মাকে খুন করেছে।”

অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর পুলিশের তদন্ত

সোমবার সকালে ঝাঁসির কোতোয়ালি এলাকায় ঘটে যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা। সোনালী বুধোলিয়া নামের ওই তরুণীর পরিবারের কাছে খবর পৌঁছায় যে, তিনি হঠাৎই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরিবারের সন্দেহ হলেও, পুলিশ প্রথমে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবেই ধরে নেয় এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে।

কিন্তু তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দেয় চার বছরের শিশুকন্যা। সে পুলিশকে জানায়, তার বাবা সন্দীপ বুধোলিয়া প্রায়ই মাকে মারধর করতেন। ঘটনার দিন বাবাই মাকে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করেন, এরপর দেহটি ঝুলিয়ে দেওয়া হয় আত্মহত্যার নাটক সাজাতে। শিশুটি শুধু মৌখিক বিবরণ দিয়েই থেমে থাকেনি, সে তার আঁকার খাতায় ছবি এঁকে পুরো ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে। তার আঁকা ছবি দেখেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, এটি নিছক আত্মহত্যা নয়—বরং ঠাণ্ডা মাথায় খুন।

স্বামীর বিরুদ্ধে আগেও উঠেছিল নির্যাতনের অভিযোগ

মৃতার বাবা-মা দাবি করেছেন, তাঁদের মেয়ের বিয়ের পর থেকেই স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। ২০১৯ সালে সোনালীর বিয়ে হয় সন্দীপ বুধোলিয়ার সঙ্গে, যিনি পেশায় একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টিটিভ। বিয়ের সময় পণের হিসেবে ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হলেও পরে জামাই গাড়ির জন্য চাপ দিতে থাকেন। অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় মেয়ের ওপর নির্যাতন আরও বাড়তে থাকে।

এমনকি, একবার তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, কিন্তু তখন আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু এবার আর মেয়েটি বেঁচে ফিরল না। পরিবারের অভিযোগ, এটি পরিকল্পিত হত্যা, এবং পুলিশের কাছে তাঁরা সুবিচারের আবেদন জানিয়েছেন।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

শিশুটির বয়ান এবং তার আঁকা ছবিগুলো পুলিশের হাতে রয়েছে, যা এখন তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ। ইতিমধ্যেই মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং সন্দীপ বুধোলিয়ার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ আরও তথ্য সংগ্রহ করছে এবং তদন্তের অগ্রগতির উপর নির্ভর করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই হৃদয়বিদারক ঘটনা সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা ও গার্হস্থ্য নির্যাতনের ভয়াবহ দিকটি আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। মাত্র চার বছরের একটি শিশু তার মায়ের ওপর হওয়া অত্যাচার নিজের চোখে দেখেছে এবং নিজের ভাষায় তা প্রকাশ করতে পেরেছে। এখন দেখার, তার এই ছোট্ট হাতে আঁকা ন্যায়ের আর্তি বিচারব্যবস্থার দরজায় কতটা সাড়া ফেলতে পারে।

মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?

Read more

Local News