ঘুম ভুলে শুটিং ও পড়াশোনার লড়াই সামলাচ্ছে টেলিভিশনের কুসুম!
টেলিভিশনের পর্দায় সে কুসুম— সবার আদরের মুখ। কিন্তু ক্যামেরার আড়ালে সে স্রেফ তনিষ্কা তিওয়ারি, দশম শ্রেণির ছাত্রী। ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা, তার আগে চলছে প্রি-বোর্ড। তবুও ১৪ ঘণ্টার শুটিং, স্কুল, পরীক্ষা— সবটাই একসঙ্গে সামলে নিচ্ছে কিশোরী অভিনেত্রী। এই তীব্র ব্যস্ততার মাঝে সময় কোথায় পায় সে? ক্লান্ত লাগে না? ঘুম পায় না?— এসব প্রশ্নই এখন ঘুরছে দর্শক-ভক্তদের মনে।
তনিষ্কা জানাল, তার কাছে এসব মোটেই কঠিন নয়। বরং এই গতিই তার অভ্যাস হয়ে গেছে। প্রি-বোর্ডের সময় সে রাতেই শুটিং করছে। শট শেষে স্টুডিও থেকে সোজা বাড়ি, আর সকাল হলে স্কুল। তখনই পরীক্ষা। অনেকের কাছে এটা অবিশ্বাস্য শোনালেও তনিষ্কার কাছে এটাই নিয়মিত রুটিন। প্রশ্ন উঠতেই সে হাসতে হাসতে বলল, “ঘুম কম হলেও আমার অসুবিধা নেই। ছোটবেলা থেকেই নায়িকা হওয়ার ইচ্ছা ছিল। তাই পরিশ্রম করতে কোনও আপত্তি নেই।”
তবে ঘুমের সময়? মাত্র চার ঘণ্টা। তার বেশি সময় মেলে না। কেউ হয়তো ভাবতে পারেন, এত পরিশ্রমে কি পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে? কিন্তু তনিষ্কা বলছে, “এখন তো অভ্যাস হয়ে গেছে। ভোরবেলা উঠেই পড়তে বসি। পরীক্ষা দিয়ে শুটিংয়ে যাই। শটের ফাঁকে একটু সময় পেলেই বই খুলে নিই। এভাবেই চলছে।” শুটিং ফ্লোরই যেন তার দ্বিতীয় স্কুল— যেখানে ক্যামেরা, ইউনিট মেম্বার, আলো আর সংলাপের মধ্যেও বইয়ের পাতায় ফিরে যায় সে।
ছোটপর্দার জনপ্রিয় সিরিয়াল কুসুম-এর নায়িকা তনিষ্কা আরও জানাল ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা। মাধ্যমিকের পর ‘হিউম্যানিটিজ’ নিয়ে পড়তে চায় সে। বিশেষ করে মনোবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান— এই দুই বিষয়ে তার প্রবল আগ্রহ। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পরবর্তীকালে ফিল্ম স্টাডিজ–এ পড়াশোনা করতে চায় তনিষ্কা। কারণ, সে তো বরাবরই বড় পর্দার নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে। সেই পথেই হাঁটছে এখন।
কাজের ব্যস্ততার মাঝেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া যে সহজ নয়, তা জানে তনিষ্কা। কিন্তু মন দিয়ে করলে সবই সম্ভব— এমনটাই তার দৃঢ় বিশ্বাস। সে বলছে, “শুটিং ভাল লাগে, পড়াশোনাও করি। দুটোকে আলাদা কিছু মনে হয় না। দুটোই আমার জীবনের অংশ।” পর্দার কুসুমও যেন বাস্তবের তনিষ্কার মতো— দৃঢ়, পরিশ্রমী, এবং স্বপ্নের প্রতি অবিচল।
এর মধ্যেই শোনা গিয়েছিল সিরিয়ালে কুসুম চরিত্রটি বদলে যাচ্ছে— এ নিয়ে দর্শকদের প্রশ্নও ছিল। তনিষ্কা জানায়, এসব পরিবর্তন চরিত্রের উন্নয়ন, সিরিয়ালের গতিশীলতা বজায় রাখতেই। বরং এই পরিবর্তনের ফলে তার অভিনয়ের পরিসর আরও বেড়েছে বলে মনে করে সে।
সব মিলিয়ে, মাধ্যমিকের আগমুহূর্তেও যে কুসুমের মানসিক দৃঢ়তা এতটুকু নড়চড় হয়নি, তা স্পষ্ট। সারা দিনের শুটিং, সকালের স্কুল, রাতের পড়াশোনা— সব যেন এক বর্ণিল ছন্দে বাঁধা তার জীবনে। ঘুম কমলেও ক্লান্তি নেই। কারণ, বড় হয়ে নায়িকা হওয়ার স্বপ্নটাই তাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।
তনিষ্কা তিওয়ারি এক্ষুণি হয়তো বুঝতে পারে না— সে শুধু সিরিয়ালের নায়িকা নয়, অনেক ছোটদের কাছে বাস্তব জীবনের অনুপ্রেরণাও হয়ে উঠছে।

