মাত্র ৮ মিনিটের ঘুমেই দূর হতে পারে ক্লান্তি!
সারাদিনের ধকলের পরে ক্লান্তিতে জর্জরিত? সময়ের অভাবে লম্বা ঘুমও সম্ভব নয়? তাহলে জেনে রাখুন, মাত্র ৮ মিনিটের একটি পাওয়ার ন্যাপই ফিরিয়ে দিতে পারে আপনার হারানো শক্তি! এই অভিনব পদ্ধতির কথা প্রথম সামনে আনেন আমেরিকার নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জোকো উইলিঙ্ক। কয়েক বছর আগে তাঁর পডকাস্ট এবং বইয়ে ‘৮ মিনিটের ঘুম’-এর গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারে আলোচনা করেছিলেন তিনি।
কী এই ৮ মিনিটের পাওয়ার ন্যাপ?
এটা আসলে সম্পূর্ণ ঘুম নয়, বরং বলা যায় অল্প সময়ের গভীর বিশ্রাম। মাত্র ৮ থেকে ১০ মিনিটের হালকা ঘুম শরীর ও মস্তিষ্ককে রিচার্জ করে। বিজ্ঞান বলছে, গভীর ঘুম বা ‘র্যাপিড আই মুভমেন্ট স্লিপ’ (REM Sleep) পর্যায়ে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। তবে পাওয়ার ন্যাপের ক্ষেত্রে এতটা অপেক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। অল্প সময়েই মানসিক সতেজতা ফেরানো সম্ভব।
কীভাবে নেবেন ৮ মিনিটের ঘুম?
জোকোর মতে, ৮ মিনিটের ঘুমের আগে কয়েকটি প্রস্তুতি জরুরি।
- আরামদায়ক জায়গায় শুয়ে পড়ুন।
- পায়ের নিচে বালিশ বা উঁচু কিছু রাখুন।
- এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ঘুম দ্রুত আসে।
- অ্যালার্ম সেট করুন ৮ মিনিটের জন্য।
- তারপর চট করে ঘুমিয়ে পড়ুন এবং সময়মতো উঠে যান।
এই পদ্ধতিকে ‘নেভি সিল ন্যাপ’ও বলা হয়।
চিকিৎসকেরা কী বলছেন?
বস্টনের হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রশিক্ষক রেবেকা রবিন্স জানিয়েছেন, “দিনের বেলা, বিশেষ করে দুপুরের দিকে শরীর স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা ক্লান্ত হয়। তখন এমন একটি ছোট্ট বিশ্রাম সতেজ অনুভব করতে সাহায্য করে।”
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথও বলছে, দিনে মাঝেমাঝে এই সংক্ষিপ্ত ঘুম কর্মক্ষমতা বাড়াতে পারে। তবে নিয়মিত রাতের ঘুমের বিকল্প হিসেবে এটি গ্রহণযোগ্য নয়।
কিছু সতর্কতাও আছে
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্লিপ মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক সিগ্রিড ভিসে জানিয়েছেন, “যদি পিঠের সমস্যা থাকে, পা উঁচু করে ঘুমানো চাপ বাড়াতে পারে। দীর্ঘ সময় পা উঁচু রাখলেও রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হতে পারে।”
তবে লন্ডন জেনারেল প্র্যাকটিসের চিকিৎসক ক্যাথারিনা লেডারেল মনে করিয়ে দিয়েছেন, “৮ মিনিট যথেষ্ট নাও হতে পারে। প্রয়োজনে ২০-৩০ মিনিটের ছোট বিরতি নিয়ে একটু বেশি ঘুমালেও ভালো ফল মেলে।”
সারাংশ
দিনের ব্যস্ততার মাঝে হালকা ক্লান্তি দূর করতে চাইলে ‘নেভি সিল পাওয়ার ন্যাপ’ দারুণ কার্যকর। তবে এটি রাতের পূর্ণাঙ্গ ঘুমের বিকল্প নয়। যাঁরা অনিদ্রায় ভোগেন বা পিঠের ব্যথায় কষ্ট পান, তাঁদের জন্য এই পদ্ধতিতে কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।
পহেলগাঁও হামলা: বলিউডের তারকাদের ক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র বার্তা