মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের ১২ দিনের মাথায় মহাজোট সরকার শপথ নিতে চলেছে। বিজেপি, শিন্ডেসেনা, এবং এনসিপি (অজিত) জোটের এই সরকারে দেবেন্দ্র ফড়ণবীস মুখ্যমন্ত্রী এবং অজিত পাওয়ার উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন। তবে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে উপমুখ্যমন্ত্রী পদ গ্রহণ করবেন কি না, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
শপথগ্রহণের প্রস্তুতি এবং মোদীর উপস্থিতি
বৃহস্পতিবার বিকেলে মুম্বইয়ের আজাদ ময়দানে মহাজোট সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণনের কাছ থেকে সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পাওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস, একনাথ শিন্ডে, এবং অজিত পাওয়ার।
দেবেন্দ্র ফড়ণবীস জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের উন্নয়নে মহাজোট সরকার একসঙ্গে কাজ করবে। অন্যদিকে, শিন্ডে জানিয়েছেন যে তিনি এখনও মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
শিন্ডের ধোঁয়াশাপূর্ণ অবস্থান
বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কোনো ইঙ্গিত দেননি। তিনি বলেছেন, “আগামীকাল বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।” শিন্ডেসেনার একটি সূত্র জানিয়েছে যে তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে রাজি হলেও স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব চান।
শিন্ডের যুক্তি, অতীতে গোপীনাথ মুন্ডে, আরআর পাটিল, এবং অনিল দেশমুখের মতো নেতারা মুখ্যমন্ত্রী না হয়েও স্বরাষ্ট্র দফতর সামলেছেন। এমনকি, বিদায়ী সরকারেও উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের হাতে ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
মহাজোট সরকারের গঠন
বিজেপি, শিন্ডেসেনা, এবং এনসিপি (অজিত) এই তিনটি দলের জোট সরকারকে ‘মহাজুটি’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে এই জোট সরকার গঠন করেছে। বুধবারই মহাজোট সরকারে দেবেন্দ্র ফড়ণবীস এবং অজিত পাওয়ারের মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার ঘোষণা করা হয়।
শপথগ্রহণে চমকের প্রত্যাশা
বিজেপির একটি সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে শিন্ডে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন। তবে শিন্ডের দাবি অনুযায়ী, স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব না পেলে তিনি মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে অনিচ্ছুক। এই দাবি নিয়ে মহাজোটের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
রাজনৈতিক কৌশল
শিন্ডে মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়া নিয়ে দোটানায় থাকলেও বিজেপি নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসী যে এই সমস্যার সমাধান হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শিন্ডের এই অবস্থান একটি কৌশল হতে পারে, যার মাধ্যমে তিনি নিজের শর্তে দপ্তরের দায়িত্ব নিতে চাইছেন।
উপসংহার
মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে মহাজোট সরকারের আবির্ভাব একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে। তবে এই জোট সরকারে নেতৃত্ব এবং দপ্তরের দায়িত্ব ভাগাভাগি নিয়ে কিছুটা জটিলতা স্পষ্ট। দেবেন্দ্র ফড়ণবীস এবং অজিত পাওয়ারের শপথগ্রহণ নিশ্চিত হলেও একনাথ শিন্ডের উপমুখ্যমন্ত্রী পদ গ্রহণ করা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের দিকে এখন নজর পুরো মহারাষ্ট্রের। শিন্ডে মন্ত্রিসভায় যোগ দিলে, মহাজোট সরকারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে। অন্যথায়, জোটের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে আরও টানাপড়েন তৈরি হতে পারে।

