Monday, December 1, 2025

মহারাষ্ট্রে ‘বিহার মডেল’ খাটছে না! তবে কি ফডণবীসই মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন?

Share

মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এখন এক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শিন্ডে শিবিরের দাবি, মহারাষ্ট্রেও বিহারের মতো ‘বিহার মডেল’ অনুসরণ করে তাদের নেতা একনাথ শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বহাল রাখা হোক। তবে বিজেপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এই মডেল প্রযোজ্য নয়।

শিন্ডে শিবিরের দাবি এবং বিজেপির অবস্থান

সোমবার শিন্ডে শিবিরের মুখপাত্র নরেশ মাশকে এক মন্তব্যে বলেন, “বিহারে বিজেপি আসনসংখ্যা বেশি থাকা সত্ত্বেও নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল। মহারাষ্ট্রেও একনাথ শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করা উচিত।” এই দাবির মাধ্যমে শিন্ডে শিবির বোঝাতে চায় যে, তারা ছোট শরিক হলেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব তাদেরই প্রাপ্য।

তবে বিজেপি এই দাবিকে একেবারে গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রেম শুক্ল স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি বিহারের মতো নয়। তিনি বলেন, “বিহারে ভোটের আগে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে এমন কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। তাছাড়া, মহারাষ্ট্রে বিজেপির সাংগঠনিক ক্ষমতা অনেক বেশি।”

মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে টানাপোড়েন

শিন্ডে শিবির এবং বিজেপির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে এই টানাপোড়েনের ফলে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিজেপি চাইছে শাসক জোটের বড় শরিক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ তাদের হাতেই থাকুক। আর শিন্ডে শিবির চায় যে, তাদের নেতা একনাথ শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী পদে রাখা হোক।

সোমবার বর্ষাভবনের সামনে শিন্ডে শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের একটি শক্তি প্রদর্শনের পরিকল্পনা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। শিন্ডে নিজেই সমর্থকদের সংযত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তবুও শিন্ডে শিবিরের সমর্থকরা তাদের দাবিতে অনড় এবং একনাথ শিন্ডেকেই মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চান।

ফডণবীসকে মুখ্যমন্ত্রী করার জল্পনা

মুম্বইয়ের রাজনৈতিক মহলে একটি জল্পনা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে যে, দেবেন্দ্র ফডণবীসকে আবার মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে, একনাথ শিন্ডেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। তবে শিন্ডে শিবির এই প্রস্তাবে রাজি হবে কিনা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, বিজেপি এই পরিস্থিতিতে কোনো তাড়াহুড়ো করতে চায় না। তারা ‘ধীরে চলো’ নীতি অনুসরণ করে প্রথমে মন্ত্রিসভা গঠন করবে। শরিক দলগুলোর মধ্যে দফতর বণ্টন করার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পদের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।

শেষ পর্যন্ত কী হবে?

বিজেপি এবং শিন্ডে শিবিরের এই রাজনৈতিক চাপানউতোরে মহারাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ রাজনীতি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিন্ডে শিবির তাদের দাবিতে অনড় থাকবে নাকি কোনো সমঝোতায় পৌঁছাবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজেপি তাদের সাংগঠনিক শক্তি কাজে লাগিয়ে ফডণবীসকেই মুখ্যমন্ত্রী করার দিকে এগোবে।

মহারাষ্ট্রের এই টানাপোড়েন রাজনৈতিক দিক থেকে শুধু রাজ্য নয়, দেশের রাজনীতিতেও একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখার, শেষ পর্যন্ত বিজেপি ও শিন্ডে শিবিরের মধ্যে সমঝোতা হয় কিনা, এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে কে বসেন।

Read more

Local News