Monday, December 1, 2025

মহারাষ্ট্রে ক্ষমতার বদল: ১১ দিনের জট কাটিয়ে বৃহস্পতি-বার সরকার গঠনের প্রস্তুতি

Share

মহারাষ্ট্রে ১১ দিনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পর অবশেষে ক্ষমতার পালাবদল হতে চলেছে। বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় অর্জনকারী বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে। বিজেপির নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে বৃহস্পতিবার শপথ নেবেন। তবে তাদের ভূমিকা এবার পাল্টে যাচ্ছে—ফডণবীস হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং শিন্ডে হচ্ছেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী।

সরকার গঠনের প্রক্রিয়া

বুধবার বিকেলে বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে এবং বিদায়ী উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার রাজ্যপাল সি.পি. রাধাকৃষ্ণনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে ১৪৫ বিধায়কের সমর্থনপত্র জমা দিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানানো হয়। রাজ্যপাল তাদের বৃহস্পতিবার বিকেল ৫:৩০টায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

এর আগে মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভবনে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নির্মলা সীতারামন এবং বিজয় রূপাণীর উপস্থিতিতে বিজেপির পরিষদীয় নেতা হিসেবে দেবেন্দ্র ফডণবীসকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। বিজেপি সূত্র জানায়, নতুন মন্ত্রিসভায় দলের ক্ষমতার আনুপাতিক বণ্টন হবে। বিজেপি পাবে ২১-২২টি মন্ত্রিত্ব, শিন্ডে শিবির ১২-১৩টি এবং অজিত পাওয়ারের এনসিপি ৯-১০টি মন্ত্রিত্ব।

রাজনৈতিক জটের কারণ

মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি আসনের মধ্যে বিজেপি ১৩২টি, শিন্ডেসেনা ৫৭টি এবং এনসিপি (অজিত) ৪১টি আসনে জয়ী হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার কারণে সরকার গঠনে দেরি হয়। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে আপত্তি জানান। শেষ পর্যন্ত বিজেপির সমর্থন না হারানোর আশঙ্কায় তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেন।

অন্যদিকে, বিজেপি নেতৃত্ব অজিত পাওয়ারের সমর্থনের উপর নির্ভর করে এগিয়ে যায়, কারণ এই সমর্থন তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করে। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে শিন্ডের দীর্ঘ আলোচনার পর শিন্ডে তার অবস্থান বদলান এবং ফডণবীসের নেতৃত্বকে মেনে নেন।

ক্ষমতা ভাগাভাগি ও শপথগ্রহণ

বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের আজাদ ময়দানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। দেবেন্দ্র ফডণবীস মুখ্যমন্ত্রী এবং একনাথ শিন্ডে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। এছাড়া, এনসিপি থেকে অজিত পাওয়ারও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নিতে পারেন। তবে মন্ত্রিসভার পূর্ণাঙ্গ গঠন এখনো সম্পন্ন হয়নি, কারণ দপ্তর বণ্টন নিয়ে আলোচনা চলছে।

ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ

মহারাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত, বিশেষ করে গার্ডেনরিচের বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়গুলোর মতো স্থানীয় সমস্যা। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও সরকারকে জনস্বার্থে কার্যকর হতে হবে। পাশাপাশি, নতুন জোট সরকারের সুষ্ঠু সমন্বয় এবং দাপ্তরিক দায়িত্ব সঠিকভাবে ভাগ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

উপসংহার

১১ দিনের রাজনৈতিক নাটকের পর মহারাষ্ট্র একটি স্থিতিশীল সরকারের দিকে এগোচ্ছে। তবে বিজেপি, শিন্ডেসেনা, এবং এনসিপি—এই তিন দলের মধ্যে সমন্বয় কতটা কার্যকর হয়, সেটাই আগামী দিনে সরকারের সাফল্যের মূল নির্ধারক হবে।

Read more

Local News