Friday, February 21, 2025

মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন মোড়: মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে শিন্ডের বড় সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত!

Share

মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন মোড়

মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আবারও চরম উত্তেজনা। সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি, শিন্ডেসেনা, এবং অজিত পওয়ারের এনসিপি জোট বিপুল আসন জয়ের পরও ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে শুরু হয়েছে চরম টানাপোড়েন। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার এই ঘোষণা নতুন করে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে জল্পনার আগুনে ঘি ঢেলেছে।

গ্রামের বাড়িতে শিন্ডের আশ্রয়

শুক্রবার সকালে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে মুম্বই ফিরেই শিন্ডে তাঁর সাতারার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। তাঁর অনুপস্থিতিতে মহারাষ্ট্র জোটের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল হয়। এদিকে, শিন্ডেসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় শিরসত জানান, রবিবার মধ্যরাতে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। শপথ গ্রহণের সম্ভাব্য দিন হিসেবে সোমবারের কথা বলা হয়েছে।

ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে মতানৈক্য

বিজেপি, শিন্ডেসেনা এবং এনসিপি (অজিত)-এর মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে মতবিরোধ চরমে পৌঁছেছে। বিজেপি সূত্রে বৈঠক ‘ইতিবাচক’ বলা হলেও, পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে শুরু থেকেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ধরে রাখার পক্ষে ছিলেন। তবে বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীসকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও স্বরাষ্ট্র দফতরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এখনও জটিলতা রয়েছে।

নির্বাচনের ফলাফল এবং পরিস্থিতি

মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন জোটের তিন দল যথাক্রমে বিজেপি ১৩২, শিন্ডেসেনা ৫৭ এবং এনসিপি (অজিত) ৪১টি আসনে জয়ী হয়েছে। কিন্তু ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে শিন্ডের এই পদক্ষেপকে অনেকেই বিজেপির উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে দেখছেন। তবে বিরোধীদের মতে, শিন্ডে শেষ পর্যন্ত বিজেপির শর্ত মেনে নিতেই বাধ্য হবেন। কারণ, পরিষদীয় সংখ্যা গরিষ্ঠতার জন্য ফডণবীসের হাতে প্রয়োজনীয় সমর্থন রয়েছে।

শিন্ডের দলীয় চাপ এবং বিজেপির অবস্থান

বিজেপির শীর্ষ নেতারা দিল্লিতে শিন্ডে এবং অজিত পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু সেই বৈঠক থেকে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসেনি। সূত্রের খবর, শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে রাজি হলেও তাঁর দল মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে চায়। অন্যদিকে, বিজেপি চায় সরকারের নিয়ন্ত্রণে মূল ক্ষমতা তাদের হাতেই থাকুক।

ভবিষ্যৎ কী বলছে?

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, শিন্ডের এই অবস্থান যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে জোটের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। যদিও বিজেপি ও অজিত পওয়ারের দল একত্রিত থাকলে সরকার গঠন করতে তাদের কোনও বাধা থাকবে না। তবে শিন্ডের সমর্থন ছাড়া জোট সরকারের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।

পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে নজর

মহারাষ্ট্রের জনগণ, বিরোধী দল এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চোখ এখন শিন্ডের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে। নতুন মন্ত্রিসভা গঠন এবং মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে পুরো রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে শিন্ডের দাবির গুরুত্ব এবং বিজেপির প্রতিক্রিয়া মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

Read more

Local News