মহাকুম্ভে শ্রীমা ভট্টাচার্যের
গত মঙ্গলবার কুম্ভমেলায় বাবার সঙ্গে পুণ্যস্নান করতে যান টলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীমা ভট্টাচার্য। সেই অভিজ্ঞতা ও কিছু বিশেষ মন্তব্য শেয়ার করেছেন তিনি। শ্রীমার মুখ থেকেই শোনা গেল কুম্ভমেলার অদ্ভুত ভিড়, পদপিষ্টের ঘটনা এবং অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নির সন্ন্যাস গ্রহণ নিয়ে তাঁর মতামত।
এদিন শ্রীমা কুম্ভমেলায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বাবা ও ছোটবেলার এক বন্ধুর সঙ্গে। তারা একসঙ্গে গাড়িতে করে প্রয়াগরাজের উদ্দেশে রওনা দেন। মঙ্গলবার, মৌনী অমাবস্যার সন্ধ্যায় ত্রিবেণী সঙ্গমের দিকে তাঁদের যাত্রা শুরু হয়। শ্রীমা জানান, ‘‘এ রকম ভিড় আমি জীবনে কখনও দেখিনি। প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার আগে থেকেই গাড়ি থেমে গিয়েছিল। তারপর হেঁটে কিংবা অন্য গাড়ি ধরে স্নানের জন্য সঙ্গমে পৌঁছাতে হবে।’’
কুম্ভমেলার সময়ে এত মানুষের ভিড় যে, হোটেল বা ক্যাম্পে থাকার কোনও ব্যবস্থা পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় এক পরিচিতের সহায়তায় রাতের জন্য থাকার ব্যবস্থা হয়ে যায়। পরিকল্পনা ছিল ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নান করার। বিশ্রাম নেওয়ার পর ভোরে প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন শ্রীমা, কিন্তু ততক্ষণে তিনি পদপিষ্টের ঘটনায় খবর পেয়েছিলেন। শ্রীমা জানান, ‘‘আমাদের পরিচিত দাদা আর ঝুঁকি নিতে চাননি। বুঝতেই পারছিলাম, এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর হবে।’’ শেষমেশ, শ্রীমা ত্রিবেণী সঙ্গমের পরিবর্তে আড়িল ঘাটে ভোর চারটেয় পুণ্যস্নান করেন।
শ্রীমা আরও বলেন, ‘‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হওয়ায় ফেরিঘাটও বন্ধ ছিল। ফলে, আমরা স্নান করে ত্রিবেণী সঙ্গমে যেতে পারিনি। স্নানের পর আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল সোমেশ্বর বাবার মন্দির দর্শন।’’
বুধবার সকালে কুম্ভমেলার পরিস্থিতি নিয়ে আরও আলোচনা শুরু হয়। শ্রীমা জানান, ‘‘স্থানীয় প্রশাসন শুরু থেকেই তৎপর ছিল। আমি জীবনে এত পুলিশ ও নিরাপত্তা টহল দেখিনি। মাইকের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও ঘোষণা করা হচ্ছিল।’’
কুম্ভমেলায় শ্রীমার আরও একটি অভিজ্ঞতা ছিল। স্নান শেষে তাঁর চোখের সামনে এক পুণ্যার্থী হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ‘‘শখ করে তিনি স্নান করতে গিয়েছিলেন, আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেয়,’’ বললেন শ্রীমা।
এদিকে, শ্রীমা একটি প্রশ্নের উত্তর দিলেন মমতা কুলকার্নি সন্ন্যাস গ্রহণ প্রসঙ্গে। শ্রীমা বলেন, ‘‘মমতাকে আমি চিনি। নব্বইয়ের দশকের তিনি ছিলেন বলিউডের তারকা। এই পদক্ষেপ তাঁর কাছে সাহসিকতা বলে মনে হয়। অনেক সময় আমরা মোহমায়া থেকে মুক্তির চেষ্টা করি, কিন্তু ভয়ও পেয়ে যাই। মমতা সেই বাঁধন ছিঁড়ে এগিয়ে যেতে চাচ্ছেন, এজন্য তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই।’’
বুধবার শ্রীমা বারাণসী যাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়াগরাজ ছেড়ে দেন। কাশী বিশ্বনাথের দর্শন করে তিনি কলকাতায় ফিরে যাবেন। কারণ, শুক্রবার তাঁর নতুন ছবি ‘অমরসঙ্গী’ মুক্তি পাচ্ছে। হাসতে হাসতে শ্রীমা বললেন, ‘‘ভগবানের কৃপায় কুম্ভ দর্শন শেষ করলাম। এখন কলকাতায় ফিরে নতুন ছবির প্রিমিয়ারে যোগ দেব।’’
এভাবে শ্রীমা ভট্টাচার্য তাঁর মহাকুম্ভ অভিজ্ঞতা ও কুম্ভমেলার ঘটনাবলি সম্পর্কে নিজের মতামত জানিয়েছেন।
শ্রীদেবী-কন্যা খুশি কপূরের বদলে যাওয়া মুখ, নাক, ঠোঁটের গড়ন: অস্ত্রোপচারের গল্প নিজেই শেয়ার করলেন!