মহাকুম্ভে পিতৃতর্পণ রচনা
প্রতিবছরের মতো এবারও মহাকুম্ভ উপলক্ষে প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে মিলিত হচ্ছেন লাখ লাখ ভক্ত ও সাধুসন্ত। এবারের কুম্ভ ছিল বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভের বিশেষ যোগ তৈরি হয়েছে। এমনই এক শুভ মুহূর্তে গঙ্গা-যমুনা ও সরস্বতীর মিলনস্থলে স্নান করলেন তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিশেষ তিথিতে পুণ্যস্নান
সরস্বতী পুজোর দিন, ২ ফেব্রুয়ারি, রচনা পৌঁছে যান প্রয়াগরাজে। সংসদ অধিবেশনের ব্যস্ততার মাঝেই তিনি ছুটে আসেন এই পবিত্র স্থানে। বসন্ত পঞ্চমীর ভোরে গেরুয়া বসনে ত্রিবেণী সঙ্গমে ডুব দিয়ে বাবার স্মৃতিচারণ করেন তিনি। বাবার আত্মার শান্তির জন্য তর্পণ করতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন রচনা। তাঁর কথায়, “ত্রিবেণী সঙ্গমে পিতৃপুরুষের জন্য তর্পণ করতে পারলাম, এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে?”
উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ রচনা
যেখানে তাঁর দল সংসদে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সমালোচনায় সরব, সেখানে রচনা প্রকাশ্যে প্রশংসা করলেন যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসনের। তিনি বলেন, “এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা! উত্তরপ্রদেশ সরকারের ব্যবস্থাপনা তুলনাহীন। কোটি কোটি মানুষের থাকা, খাওয়া, সুরক্ষা সবই অত্যন্ত সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে।”
যদিও কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে বহু মানুষের মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে, বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে যে সরকার মৃতের সংখ্যা লুকোচ্ছে, তবুও রচনা এই বিপুল আয়োজনের প্রশংসা করতেই বেশি আগ্রহী। তাঁর মতে, “দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই, কিন্তু এরপর সরকার আরও সতর্ক হয়েছে।”
‘ভিআইপি’ নয়, সাধারণ ভক্তের মতোই অভিজ্ঞতা
অনেকেই ভাবতে পারেন, সাংসদ হওয়ার কারণে রচনা বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, কুম্ভে ভিআইপিদের জন্য আলাদা কোনো সুবিধা নেই। তাঁর কথায়, “আমি অন্যদের মতোই গিয়েছি, শুধু হাঁটার পরিবর্তে জলপথে গিয়েছি। কারণ দীর্ঘ পথ হাঁটা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।”
অব্যবস্থার অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন রচনা
কুম্ভমেলার বিশালত্বের কারণে মাঝেমধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা যায়, তবে রচনা জানিয়েছেন, তিনি তেমন কিছু দেখেননি। তাঁর মতে, “সাধারণ মানুষ যাঁরা থাকার জায়গার জন্য অর্থ দিতে পারেন না, তাঁদের জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কেউ খোলা আকাশের নিচে থাকেননি।”
মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরতে না পারার আক্ষেপ
যদিও এই সফর তাঁর জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তবুও একটা ছোট্ট আক্ষেপ রয়ে গেছে। তিনি জানান, সময়ের অভাবে সাধু-সন্তদের আখড়া ঘুরে দেখা হয়নি। তাঁর কথায়, “কুম্ভমেলা সত্যিই সকলের জন্য, আমিও সাধারণ ভক্তের মতোই অংশ নিয়েছি।”
রচনার অভিজ্ঞতা নিয়ে ইতিমধ্যে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূলের এক সাংসদ কীভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যের এত প্রশংসা করলেন? তবে রচনা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁর এই অভিজ্ঞতা একান্তই ব্যক্তিগত, রাজনীতির সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
মহাকুম্ভের এই মুহূর্ত তাঁর মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে, সে কথা নিজেই জানিয়ে দিলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিয়ের মাস দুয়েকের মধ্যে স্বামীর সঙ্গে মন কষাকষি শোভিতার, কোথায় ভুল করেছিলেন নাগা চৈতন্য?